নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ মে, ২০২৪

ঢাকা উড়ালসড়ক

শেয়ার হস্তান্তরে দ্বন্দ্ব, আটকে গেল কাজ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে (উড়ালসড়ক) ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের ওপর ২ সপ্তাহের স্থিতাবস্থা (স্ট্যাটাসকো) জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির এক আবেদনের ওপর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক ও ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল। চীনা কোম্পানির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের ওপর আপিল বিভাগ ২ সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন। আপিল বিভাগ বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন।

মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, ‘চায়না ব্যাংক অব এক্সিম জানিয়ে দিয়েছে, শেয়ার হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজে টাকা দেবে না। ফলে আপাতত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে।’ গত ১২ মে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আদেশ তুলে নেন হাইকোর্ট। ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাইল্যান্ডের ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের বাধা কেটে যায়। বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধরীর হাইকোর্টের একক কোম্পানি বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।

এর আগে আদালতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাইল্যান্ডের ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দিন সিনোহাইড্রো করপোরেশনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, আদেশে আদালত বলেছেন, দেনা-পাওনা নিয়ে থাই ও চায়না কোম্পানির বিরোধ সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন আদালত নিষ্পত্তি করবেন। পরে অবশ্য এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানি।

প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড মিলে করছিল এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহী প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৪১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বাকি ব্যয়ের মধ্যে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ, চীন শ্যাংডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল গ্রুপ ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন ১৫ শতাংশ দেওয়ার কথা ছিল। প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয়ের ৭৩ শতাংশের জোগান দেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। আর ২৭ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কিলোমিটার। র‌্যাম্পসহ এর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ৪৬.৭৩ কিলোমিটার। পুরো কাজ শেষ হলে ৩১টি র‌্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন ওঠানামার সুযোগ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ২ সেপ্টেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশ উদ্বোধন করেন। পরদিন বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেইট পর্যন্ত ১১.৫ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়া হয়। পরে কারওয়ানবাজার (এফডিসি) অংশে নামার সংযোগ সড়ক বা ডাউন র‌্যাম্প খুলে দেওয়া হয় এ বছরের ১৯ মার্চ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close