নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ মে, ২০২৪

বিদেশি ঋণের প্রকল্পে বাড়তি পরিশ্রমের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

* ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন * গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ু খাত * উপজেলা নয়, আগামীতে প্রকল্প হবে জেলাভিত্তিক

বৈদেশিক ঋণনির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়তি পরিশ্রম করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান আছে সেগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ নজর দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতি তিন মাস পরপর এসব প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে একনেকে একটি প্রতিবেদন দিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আবদুুস সালাম। এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার ও পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং অন্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়াতে প্রকল্প পরিচালকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে যাতে একই স্থানে কাজে যোগ দিতে পারেন সেজন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পিডি পুল করতে হবে। চিকিৎসকরা যদি পিডি হন তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রকল্পের শুরুতেই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সঠিকভাবে করতে। সেজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ করে তাদের জন্য নিবন্ধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা যে বৈদেশিক ঋণ নিচ্ছি সেগুলো বিচার বিশ্লেষণ করেই। আগের মতো সুতা লাগানো ঋণ নেওয়া হয় না। কারণ ঋণ দিয়ে এটা করতে হবে ওটা করতে হবে এসব থাকলে আমরা সেই ঋণ নেই না।

আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানান, গত জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল ৫৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এনইসি বৈঠকে সচিবদের সামনে এ তথ্য তুলে ধরে এডিপি বাস্তবায়ন বৃদ্ধির জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য উন্নয়ন বাজেট বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। নতুন উন্নয়ন বাজেটে পরিবহন ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং স্থানীয় সরকারের খাতের বরাদ্দ কমছে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জলবায়ু খাতকে। তবে খাতভিত্তিক বিবেচনায় এবারও শীর্ষে থাকছে পরিবহন ও যোগাযোগ।

চলতি অর্থবছরে অনুমোদিত এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। আর নতুন অর্থবছরে এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার। সে হিসেবে উন্নয়ন বাজেটের বরাদ্দে বাড়ছে ২ হাজার কোটি টাকা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম বলেন, আগামী অর্থবছরে এডিপির আওতায় ১৩২১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। গ্রামীণ উন্নয়ন উপজেলাভিত্তিক নয়, এখন থেকে জেলাভিত্তিক হবে। দেখা যায় অনেক উপজেলায় একাধিক প্রকল্প, আবার অনেক উপজেলা অবহেলিত থাকে। এটা বন্ধ করতেই জেলাভিত্তিক প্রকল্প হাতে নেব যাতে উন্নয়ন সমভাবে বণ্টন হয়। যেসব সরকারি কর্মকর্তা নানা সময়ে বিদেশে প্রশিক্ষণে যান, সেখান থেকে ফেরার পর তাদের প্রশিক্ষণের ধরন অনুযায়ী প্রকল্পে নিয়োগের অনুশাসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, চলতি অর্থবছরে ৩০ জুনের মধ্যে ৩৫৬টি প্রকল্প শেষ হবে যা এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ। কোনো চিকিৎসক প্রকল্প পরিচালক হলে তাকে আলাদা প্রশিক্ষণ দিতে এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close