গাজীপুরের মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে লিফট আটকে ৪ শিক্ষার্থী সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছে। লিফটটি ৬ শিক্ষার্থী নিয়ে প্রায় ২০ মিনিট আটকা পড়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর শহরের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অসুস্থ অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, স্কুল ছুটির পর পঞ্চম তলা থেকে লিফটে নিচে নামে। টিফিন খেয়ে এক্সটা ক্লাসের জন্য আবার ১২টা ৪২ মিনিটে ৫ সহপাঠীসহ তারা স্কুলের পঞ্চম তলায় যাওয়ার জন্য ফের লিফটে ওঠে। দোতলা ও তিনতলার মাঝামাঝি যাওয়ার পর বিদ্যুৎ চলে গেলে লিফটটি আটকে যায়। এ সময় তারা ডাকচিৎকার শুরু করে। ইন্টারকমের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। একপর্যায়ে তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাদের ৩ সঙ্গী লিফটের ফ্লোরে বসে পড়ে। খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ লিফট তৃতীয় তলায় নিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তখন দুপুর ১টার বেশি বাজছিল বলে ওই ছাত্রী জানায়।

ওই শিক্ষার্থী আরো জানায়, লিফট থেকে বের হওয়ার পর সেও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাদের মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করা হয়। আটকে থাকার সময় শ্বাস নিতে এমন কষ্ট হয়েছে যে আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়ত মারা যেত। জানা গেছে, স্কুল অ্যান্ড কলেজে কোনো লিফটম্যান নেই। লিফটটিও আকারে ছোট। জেনারেটরটি ম্যানুয়াল। তাছাড়া বিদ্যুৎ চলে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিকটবর্তী তলায় থামার ডিভাইস লিফটিতে বসানো নেই।

স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাবলু রহমান জানান, ছাত্রীরা লিফটে ওঠার ২-১ মিনিটের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তিনি জেনারেটরম্যানকে জেনারেটর চালু করতে বলেন। কিন্তু জেনারেটরটি চালু হচ্ছিল না। তিনি নিজেও চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তিনি ইন্টারকমে আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভয় না পেতে বলে দ্রুত উদ্ধারের আশ^াস দেন। পরে চাবি দিয়ে পাঁচতলা থেকে লিফটের দরজা খুলতে খুলতে একপর্যায়ে তৃতীয় তলায় গিয়ে দেখতে পান লিফট দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার মঝখানে আটকে রয়েছে। এ সময় লিফট টেনে তৃতীয় তলায় নিয়ে আটকেপড়াদের উদ্ধার করা হয়।

প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সায়লা ফারজানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘লিফটে স্বয়ংক্রিয় ডিভাইস নেই। তারা ২-৩ মিনিট আটকা ছিল। শিগগিরই লিফটি পরিবর্তনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উল্লেখ, গত ১২ মে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিফটে আটকা পড়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়।

"