নিজস্ব প্রতিবেদক
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
আ.লীগ ক্ষমতায়, তাই কথা বলতে পারছে বিএনপি
আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে বিএনপি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, তাদের (বিএনপি) ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে তারা এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। গতকাল শুক্রবার সকালে গণভবনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরোধী দলে থাকার সময়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা কোনো মামলাই রাজনৈতিক নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগ, গ্রেনেড হামলা, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান ও দুর্নীতির মতো সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তরাই এ-সংক্রান্ত মামলার আসামি হয়েছেন। তিনি বলেন, আজ বিএনপি সব জায়গায় কান্নাকাটি বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কীসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্র পাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২০১৩ ও ১৪ সালে নির্বাচন বানচালের জন্য এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আগুনসন্ত্রাস ও সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে, বাস, লঞ্চ ও রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কি হবে। তিনি বলেন, ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলাই তো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে। নির্বাচন ঠেকাতে যেয়ে তারা রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে, যারা এগুলো করল তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না? যারা এগুলো করল তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না? তাদের কি মানুষ পূজা করবে, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে, তাদের ৬০ লাখ লোক গ্রেপ্তার হয়েছে, ৬০ লাখ লোক ধারণ করার ক্ষমতাও নেই এসব জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক- এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সমবায়ভিত্তিক কৃষি নিশ্চিত করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমবায়ভিত্তিক কৃষি চালু করে জমির আইল দূর করে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি রক্ষা করা যেতে পারে। কৃষিতে গবেষণার পাশাপাশি কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ সবচেয়ে সফল। আমাদের সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উদ্যোগে কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থানার পদক্ষেপগুলোর চুম্বকাংশ তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের কৃষি উন্নত হয়েছে। কারণ সরকার কৃষি খাতের গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। সরকার কৃষি খাতে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দেশের খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। একসময় যারা নুন-ভাত বা ডাল-ভাতের কথা ভাবতেন, তারা এখন মাছ-মাংস-ডিমের কথা ভাবেন। তাই যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে কি না। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
"