নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদযাত্রা

লঞ্চে যাত্রী বাড়াতে নানা উদ্যোগ

অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই নৌপথে যাত্রীদের চাপ কমে গেছে। এছাড়া যানজট ও সড়কে অব্যবস্থাপনার কারণে সদরঘাট পর্যন্ত যাত্রীদের পৌঁছানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। যানজটে ভারী ব্যাগ, বাচ্চা নিয়ে অনেক সময় হেঁটে টার্মিনালে পৌঁছাতে হয়। এ সমস্যা সমাধানে ঈদের আগে সদরঘাট থেকে বাহাদুরশাহ পার্ক পর্যন্ত রাস্তা যানজটমুক্ত এবং সদরঘাট টার্মিনাল ও লঞ্চগুলো হকারমুক্ত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

পাশাপাশি যাত্রীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোকে ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় সড়কের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সদরঘাট টার্মিনালের সম্মুখের সড়ক থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে মধ্যরাত থেকে গণপরিবহনগুলোকে এলোমেলোভাবে অবস্থান না করে নির্ধারিত স্ট্যান্ডে পার্কিং নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

গত ১৮ মার্চ অভ্যন্তরীণ নৌপথে নিরাপদ ও দুর্ঘটনামুক্ত নৌযান চলাচল নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সভাকক্ষে সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে একটি সভা হয়। সভার কার্যবিবরণী থেকে এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানা যায়। সভায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থে লঞ্চে মোটরসাইকেল পরিবহন সীমিত করা হয়েছে। যাতে কোনোভাবেই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন করা না হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে লঞ্চে দুটি, ১২০ ফুট থেকে ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে লঞ্চে চারটি এবং ২০১ ফুট থেকে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে লঞ্চে সর্বোচ্চ ছয়টি মোটরসাইকেল পারাপার করা যাবে। এছাড়া মোটরসাইকেল পরিবহনের ভাড়াও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ওজন ও আকৃতি বিবেচনা করে ঢাকা-চাঁদপুর পর্যন্ত প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য ৩০০ টাকা এবং ঢাকা-চাঁদপুরের ডাউনে (বরিশাল-ঝালকাঠী-পটুয়াখালী-বরগুনা) প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য ৫০০ টাকা।যদিও সভায় এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন লঞ্চ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপথ যাত্রী পরিবহন সমিতির (বিআইডব্লিউপিসিএ) সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।

বর্তমানে লঞ্চে যাত্রী কমে গেছে উল্লেখ করে সিদ্দিকুর রহমান মোটরসাইকেল পারাপারের সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে সেটা সভায় আমলে নেওয়া হয়নি।এছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে তার মধ্যে আছে, ঈদের আগে পাঁচ দিন, ঈদের দিন এবং পরে পাঁচ দিনসহ ১১ দিন সদরঘাট হয়ে নৌযানে মালামাল পরিবহন বন্ধ থাকবে। রাতের বেলায় বন্ধ থাকবে স্পিডবোট চলাচল। নৌপথে জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবং বিআইডব্লিউটিএর হটলাইন ১৬১১৩-এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রবিবার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন লঞ্চ মালিকরা। বিআইডব্লিউপিসিএর সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ২০ রোজা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের লঞ্চে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। আগে অগ্রিম টিকিট শুরুর আগেই অনেকে টিকিটের কথা বলে রাখত। এবার কেউ অগ্রিম টিকিটের কথা বলেনি। আমরা আশঙ্কা করছি এবার লঞ্চে যাত্রী পাওয়া নিয়ে।

বদিউজ্জামান বাদল জানান, ‘স্বাভাবিক সময়ের মতোই সদরঘাট থেকে সীমিত (৩০ থেকে ৩৫টি) লঞ্চ ছাড়া হবে। যাত্রী হলে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হবে। গত ঈদে ৬০ থেকে ৬৫টি লঞ্চ চালানো হয়েছিল।’ গত ঈদে শেষ মুহূর্তে ব্যাপক যাত্রী হয়েছিল। নৌপুলিশের তথ্যমতে, গত বছরের ঈদুল ফিতরের সময় সদরঘাট থেকে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও চাঁদপুরগামী লঞ্চে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৫ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close