নিজস্ব প্রতিবেদক
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে এবার কঠোর হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেলা-উপজেলায় অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধে আগামীকাল রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশেষ অভিযান। গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর থেকে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তালিকাসংবলিত চিঠি ১১ জেলার সিভিল সার্জনের কাছে পাঠানো হয়।
চিঠিতে লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ব্লাড ব্যাংকের কার্যক্রম ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তালিকায় ১১৮ হাসপাতাল ও ১২২ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে লাইসেন্সবিহীন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় অনিবন্ধিত হাসপাতালের সংখ্যা ৬টি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১১টি।
ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ইফতেখার আহমেদ জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকা তৈরি করে সিভিল সার্জনদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব প্রতিষ্ঠানে লাইসেন্স ছাড়াই সেবাদান কার্যক্রম চলছে, তাদের তালিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান জানান, রবিবার থেকে অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিক বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অভিযানে হাসপাতালে ১০টি নির্দেশনার বাস্তবায়ন না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ১০টি নির্দেশনা বা শর্ত জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, কোনো অবস্থাতেই নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ছাড়া চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদন (অ্যানেসথেটিস্ট) ছাড়া যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচার করা যাবে না।
গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা এক অফিস আদেশে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান সেই অফিস আদেশে সই করেন। তাতে ১০টি নির্দেশনা বা শর্ত জারি করা হয়েছে। অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার ক্ষেত্রে এসব শর্ত আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে (জে এস হাসপাতাল) খতনা করার সময় আহনাফ তাহমিদ (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। স্বজন ও পুলিশ সূত্র বলছে, চিকিৎসকরা শিশুটিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে অবেদন (অ্যানেসথেসিয়া) করে তার খতনা করেন। কিন্তু শিশুটির আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। ওই দিন রাত ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। গত মাসে রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার পর পাঁচ বছর বয়সি শিশু আয়ানের মৃত্যু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এমন নির্দেশনা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
"