প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ক্ষমতা ভাগাভাগি করেই সরকার হচ্ছে পাকিস্তানে

প্রধানমন্ত্রী পদে পালাক্রমে থাকছে পিএমএল-এন ও পিপিপি!

পাকিস্তানে ভোটের ফল জোটে গড়ালেও সরকার গঠনে সুরাহায় আসতে পারেনি কোনো দল। ভোটে সর্বাধিক আসন পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে দল হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন শিবির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপিসহ অন্যদের জোট সরকারে ভেড়ানোর। এরই মধ্যে পিপিপি প্রধানমন্ত্রীর পদ দাবি করায় কৌশলী পথ ধরেছে পিএমএল-এন। ক্ষমতা ভাগাভাগির একটি নতুন ‘ফর্মুলা’ মাথায় নিয়েই আলোচনায় যাচ্ছে নওয়াজের দল। আবার পাঁচ বছর মেয়াদের আড়াই বছর আড়াই বছর ভাগাভাগি করে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা নিয়েও পিএমএল-এন ও পিপিপির মধ্যে আলোচনার খবর শোনা যাচ্ছে। খবর জিওটিভি ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ ভোটের ফল অনুযায়ী, ২৬৪ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ আসনে জয় পেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই নওয়াজের পিএমএল-এন জিতেছে ৭৫ আসনে। পিপিপি জয় পেয়েছে ৫৪ আসনে এবং এমকিউএমণ্ডপি ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। অন্য ছোট কয়েকটি দল পেয়েছে ১৭ আসন।

একক সরকার গঠনে প্রয়োজন ১৩৪ আসন। তবে কোনো দলই তা পায়নি। বিধি মোতাবেক, ভোটের তিন সপ্তাহ অর্থাৎ, আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে।

ভোটের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিতরা সর্বাধিক আসনে জিতলেও তাদের পরিচয় স্বতন্ত্র এমপি। সেক্ষেত্রে নওয়াজের পিএমএল-এন নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল দাবি করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, জোট সরকার গঠনের। নওয়াজ শিবির পিপিপিসহ আরো ছোট দুয়েকটি দল বা স্বতন্ত্র কয়েকজনকে জোটে ভেড়ানোর জন্য আলোচনা চালাচ্ছে। তবে এরই মধ্যে নওয়াজের ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ নেতারা পিপিপির কো- চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন। বৈঠকে পিএমএল-এনের সঙ্গে জোটে যেতে হলে পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টোকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি জানিয়েছেন তার বাবা আসিফ জারদারি। এমন পরিস্থিতিতে পড়ে একটি ফর্মুলা বানিয়েছে নওয়াজের দল এবং সেই কৌশল ধরেই সম্ভাব্য মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চালাতে চায় দলটি।

পিএমএল-এন সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পদ পিএমএল-এনের হাতেই থাকবে। পিপিপিসহ মিত্ররা যদি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে রাজি হয়, তবে প্রেসিডেন্ট ও স্পিকারের পদ পিপিপিকে দেওয়া যেতে পারে।

একইভাবে এমকিউএমণ্ডপিকে দেওয়া যেতে পারে ডেপুটি স্পিকারের পদ। এছাড়া স্বতন্ত্র পদে জেতা কোনো প্রভাবশালী প্রার্থী সরকারে এলে তাকেও ডেপুটি স্পিকার পদ দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে বণ্টন করে নিতে চায় পিএমএল-এন।

এদিকে পিপিপি সূত্র জানিয়েছে, দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো ও কো- চেয়ারম্যান আসিফ জারদারি নতুন জোট সরকারে থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতা ভাগাভাগি সূত্রের অধীনে ক্ষমতায় বসা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে উভয় দল। এ সূত্রের আওতায় পাঁচ বছরের মেয়াদের অর্ধেক সময়ের জন্য পিপিপি এবং বাকি অর্ধেক সময়ের জন্য পিএমএল-এন তাদের দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। এ সম্ভাবনা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে।

বৈঠকের সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র মতে, ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর কেন্দ্র ও প্রদেশে জোট সরকার গঠনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রবিবার প্রথমবারের মতো আলোচনায় বসেন পিপিপি ও পিএমএল-এন নেতারা। এ সময় অর্ধেক মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ধারণাটি প্রথমবার আলোচনা করা হয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close