নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আনসার ও ভিডিপি সমাবেশে ভাষণ

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সততা এবং সাহসিকতার সঙ্গে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি আপনাদের বলব- আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সবাই কঠোর পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে কাজ করুন। গতকাল সোমবার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ-২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্র্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ বাহিনী হিসেবে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। জননিরাপত্তা রক্ষায় যেকোনো অশুভ তৎপরতার মোকাবিলা করতে হবে এবং সততা, সাহস ও আন্তরিকতার সঙ্গে আপনারা সেটা রুখে দাঁড়াবেন। জনগণও বিনিয়োগের শন্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। উন্নয়নের পূর্বশর্ত স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা ও অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ধারাবাহিকতা। সেই পরিবেশ রক্ষার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০২৩ সালে আমাদের বিরুদ্ধে যখন অগ্নিসন্ত্রাস, রেলে আগুন দেওয়া, রেললাইন কেটে ফেলা, মানুষকে হত্যা করাসহ বিএনপি-জামায়াত যে ধ্বংসাত্মক কাজ করেছিল, তখন জাতীয় নিরাপত্তা বিধানে আনসার বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। এজন্য আমি সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, ৯৬ সালে প্রথম সরকারে আসার পর থেকেই এ বাহিনীর উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে এ বাহিনী শুধু দেশে নয়, বিদেশেও সুনাম অর্জন করে যাচ্ছে। আমাদের এ বাহিনী গ্রামপর্যায় পর্যন্ত কাজ করে থাকেন। আমরা গ্রাম উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছি। ‘আমার গ্রাম আমার শহর’, ‘আমার বাড়ি আমার খামার’, এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই আনসার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। তাছাড়া যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আনসার বাহিনীর সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং তাদের সহযোগিতা করে। কখনো ঝড়, বন্যা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটে এরকম যেকোনো ঘটনায় আমরা দেখেছি আমাদের আনসার বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য ৬১ লাখ। দুটি নারী ব্যাটালিয়ানসহ এতে ৪২টি ব্যাটালিয়ান রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা পার্বত্য এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ‘অপারেশন উত্তরণ’-এ দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

সরকার আনসার বাহিনীর কল্যাণে পুরোনো আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন প্রণয়ন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আনসার ব্যাটালিয়ন আইন-২০২৩ পাস করা হয়েছে। সেখানে চাকরির শুরু থেকেই স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বার্ষিক সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি, রেশন বৃদ্ধি, নারী সদস্যদের পোশাক পরিচ্ছদ পরিবর্তনসহ বাহিনীর আধুনিকায়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। ২০০৮ থেকে টানা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ায় বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়ে আসতে পেরেছি। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের কার্যক্রম শুরু হবে। তখন আমাদের আরো আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে। ২০৪১ সালে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, সেখানে আমাদের প্রত্যেকটি বাহিনী বিশেষ করে আনসার বাহিনীও সেভাবেই স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে এবং দেশের উন্নয়নের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করে যাবে। প্রত্যেকটা গ্রামকে আমরা নিরাপদ করতে চাই। আমাদের গ্রামগুলোও স্মার্ট গ্রাম হিসেবেই গড়ে উঠবে। সেখানে কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না, ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, অনেক ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি।

এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক এবং আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নুরুল হাসান ফরিদী অনসার একাডেমির অনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৮০ আনসার ও ভিডিপি সদস্যের মাঝে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পদক বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। সুসজ্জিত প্যারেড তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। পরে তিনি কোরিওগ্রাফি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close