প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
হামলা-সহিংসতায় পাকিস্তানে ভোট
![](/templates/web-ps/images/news-logo.jpg?v=4)
হামলা ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এদিন দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়। গভীর অর্থনৈতিক সংকট, লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি, সহিংসতা ও কারচুপির আশঙ্কার মধ্যেই পাকিস্তানজুড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১৭ হাজারের বেশি প্রার্থী।
পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতা হারানোর প্রায় দুই বছর পর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অবনতি হতে থাকা নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এদিন দেশজুড়ে অস্থায়ীভাবে মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখে। এ বারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন ছিল। এদিন খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান জেলার কুলাচি এলাকায় টহলরত পুলিশের একটি দল লক্ষ করে একটি বোমার বিস্ফোরণ এবং গুলিবর্ষণে চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। সেখান থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরের একটি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি লক্ষ করে বন্দুকধারীদের হামলায় আরো এক ব্যক্তি নিহত হন। সহিংসতায় ৬ জন নিহত হন। বেলুচিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় ভোট চলাকালে গ্রেনেড হামলা খবর পাওয়া যায়। আগের দিন সেখানে পৃথক দুটি বোমা হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন।
উত্তর ওয়াজিরিস্তানের প্রার্থী মহসিন দাওয়ার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের কাছে (ইসিপি) এক চিঠিতে স্থানীয় তালেবান তার এলাকায় কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের দখল নিয়ে পোলিং কর্মকর্তা এবং স্থানীয়দের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। ভোট শেষ হওয়ার পর বেসরকারি ফল পাওয়ার কথা থাকলেও আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ফল পাওয়া যেতে পারে। তবে অনেক বিশ্লেষকের বিশ্বাস কোনো দলই হয়তো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। পাকিস্তানের পরবর্তী সরকার কারা গঠন করবে, তা নির্ধারিত হবে এ ভোটে। এদিন কেন্দ্রীয় আইনসভার পাশাপাশি চারটি প্রদেশের আইনসভার নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। একজন ভোটার দুটি করে ভোট দেবেন, একটি জাতীয় আইনসভার জন্য অন্যটি প্রাদেশিক আইনসভার জন্য।
জাতীয় আইনসভার আসন সংখ্যা ২৬৬। এর মধ্যে পাঞ্জাব প্রদেশে আছে সবচেয়ে বেশি, ১৪১টি আসন। সিন্ধু প্রদেশে আছে ৬১, খাইবার পাখতুনখওয়ায় ৪৫, বেলুচিস্তানে ১৬ ও রাজধানী ইসলামাবাদ অঞ্চলে ৩টি। পাঞ্জাব প্রদেশে জয়ী দলই সাধারণত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও কারারুদ্ধ অন্য বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতারা আদিয়ালা কারাগার থেকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট দিয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) স্বীকৃতি পাক নির্বাচন কমিশন বাতিল করায় তারা সরাসরি ভোটের মাঠে নেই। এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তানি ক্রিকেট অধিনায়কের দলের অনেক নেতা ‘নির্দল’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ইমরান এখন জেলবন্দি।
"