নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪

অবৈধ ১২৮৫ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে

সারা দেশে অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল আছে ৫ হাজার। আর অনুমোদন নিয়ে চলছে ১০ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৮৫টি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সন্ধান পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে শিগগিরই মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবেই এতদিন ধরে এসব চলেছে। এখন শুধু বন্ধ করলেই হবে না, মাঠপর্যায়ে নজরদারিও জোরদার করতে হবে। ৪ বছর ধরে কোনো নিবন্ধন ছাড়াই চলছে নীলফামারীর সেবা ডায়াগনস্টিক। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কক্ষে কাউকে পাওয়া গেল না। পড়ে থাকতে দেখা গেল অপরিচ্ছন্ন যন্ত্রপাতি। যার সবই জরাজীর্ণ। ডায়াগনস্টিকটির স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘আমি এখনো লাইসেন্স পাইনি। আর তিন মাস পর এখানে ব্যবসা বন্ধ করে চলে যাব। এজন্য আমি লাইসেন্সের জন্য দৌড়াদৌড়ি করছি না।’

একই এলাকার নিউ অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিকের অবস্থাও একই। রোগ নির্ণয়ের দায়িত্বে কাউকেই পাওয়া যায়নি। এ দুটি প্রতিষ্ঠানই অনুমোদনহীন। এমন ১৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে শুধু নীলফামারীতেই। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত সপ্তাহে সারা দেশের অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তথ্য চায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভাগীয় কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ৪১৫টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিভাগে। এরপরই ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও খুলনার অবস্থান।

ময়মনসিংহ বিভাগে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৫২, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪০ আর খুলনা বিভাগে রয়েছে ১৫৬টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রংপুর বিভাগে ১১১, রাজশাহী বিভাগে ৫৫, বরিশাল বিভাগে ৪৮ এবং সিলেট বিভাগে মিলেছে ৮টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই রোগী দেখেন সরকারি চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মঈনুল আহসান বলেন, ‘এ কপিটা আমরা জেলা পর্যায়ে মাঠ প্রশাসনকে দেব। তারা স্থানীয় জেলা প্রশাসক বা ম্যাজিস্ট্রেটদের মধ্যে সমন্বয় করে তালিকা ধরে বন্ধ করানোর ব্যবস্থা করাব। আইনের ফাঁকেই তারা বের হয়ে আসে। আমি চিন্তা করছি, তাদের বন্ধ করব। কিন্তু তারা যদি আবার আইনের মাধ্যমে ফিরতে চায়, এ ক্লিনিকগুলোকে আমি অত্যন্ত কঠোরভাবে দেখব।’ অনুমোদন নিয়েই চালু করতে হয় হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তবে দেশে এর উল্টোটাই ঘটছে। এর পেছনে বড় কারণ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনদের নজরদারির অভাব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আহমেদুল কবীর বলেন, ‘শুধু ব্যবসা করার জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান খুলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা, এটা নৈতিক স্খলনেরই সামিল বলে আমি মনে করি। নিবন্ধন ছাড়া যারা তাদের তো অনেক ধরনের অন্যায় করার সুযোগ থাকে। সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয় এবং এদের কার্যক্রম সম্বন্ধে জানাও খুব ডিফিকাল্ট। আমি বিশ্বাস করি, যেগুলো হচ্ছে, মনিটরিং জোরদার করে আমরা এগুলো ঠিক করে ফেলতে পারব।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close