ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের টিকিট বিক্রয়কর্মী ফারুক। একই পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন। সন্তানের অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার খরচ জোগাতে নিজামকে পাওনা টাকার জন্য চাপ দিয়েছিলেন ফারুক। আর তাতেই তাকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তাররা হলেন- হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. নিজাম উদ্দিন (৩৬), মো. সোহাগ (৩৮), মো. জহিরুল ইসলাম (৪৮), মো. রনি হোসেন (২৩) ও মো. বাদশা (২৩)। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত স্ক্রু ড্রাইভার ও লোহার রড উদ্ধার করা হয়।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, নিজাম ও ফারুক হোসেন একসঙ্গে টঙ্গীর চেরাগআলী এলাকায় ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টারে কাজ করতেন। দীর্ঘ ৫-৬ বছরের পরিচয়ের সুবাদে তাদের মধ্যে প্রায়ই লেনদেন হতো। ফারুক তার পাওনা টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করায় নিজাম তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা এক্সপ্রেসের একটি খালি বাসে ফারুক হোসেনকে তুলে পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফারুককে বাসে ওঠানোর পর সোহাগ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে গুরুতর আঘাত করেন। এ সময় বাদশাহ বাসের টুলবক্স থেকে স্ক্রু ড্রাইভার নিয়ে ফারুকের এক চোখ উপড়ে ফেলে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ৩০০ ফিট থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ের পাশে রঘুরামপুরের রাস্তার পাশে ফারুকের মরদেহ ফেলে বাসটি নিয়ে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যান আসামিরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যান। তিনি জানান, গত ৯ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ে রাস্তার পাশে চোখ উপড়ানো অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ দেখে স্থানীয়রা র‌্যাব ক্যাম্পে খবর দেন। র‌্যাব-১ প্রাথমিকভাবে মরদেহের সঙ্গে থাকা মানিব্যাগে বিভিন্ন নথিপত্র এবং ওআইভিএস ডিভাইসের মাধ্যমে মরদেহটির নাম ও পরিচয় শনাক্ত করে।

এ ঘটনায় ফারুকের মা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১-এর যৌথ আভিযানিক দল রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুরের টঙ্গী ও লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

"