অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

প্রতি মাসে নির্ধারণ হবে গরুর মাংসের দাম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে প্রতি মাসে দাম পুনর্নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। বিক্রীত প্রতি কেজিতে মাংসের পরিমাণ ৭৫০ গ্রাম, হাড় ২০০ গ্রাম এবং ৫০ গ্রাম চর্বি থাকবে। নতুন এ দর কার্যকরের ঘোষণায় সংগঠন দুটির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগরীর মাংস ব্যবসায়ী ও খামারিরা। গত বুধবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাদিক এগ্রোতে খামারি ও মাংস ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মোর্তোজা মন্টু, খামারিদের সংগঠন বিডিএফএ সভাপতি মো. ইমরান হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি আলী আজম রহমান শিবলী, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলমসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মাংস ব্যবসায়ীরা।

বৈঠকে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বলেন, বর্তমান সরকারের ইলেকশনের আগে এক মাস অর্থাৎ জানুয়ারির ৭ তারিখ পর্যন্ত গোশতের দাম ৬৫০ টাকা রাখব। এরপর প্রয়োজন হলে বাড়বে অথবা কমবে। এখন থেকে প্রতি ১ মাস পরপর আমরা দাম নির্ধারণ করব। আপাতত শুধু ঢাকা শহরেই বৃহস্পতিবার থেকে এ দাম কার্যকর হবে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে তা বাস্তবায়ন হবে। কীসের ওপর ভিত্তি করে মাংসের দাম কমবে বা বাড়বে- প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মাল (গরু) কেনাকাটার ওপর দাম বাড়নো বা কমানো হবে। এক মাস আমরা ৬৫০ বিক্রি করে দেখব টিকতে পারছি কিনা।

বিডিএফএ সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রির মধ্যেও শর্ত আছে। সেটা হলো ১ কেজি মাংসের মধ্যে ৭৫০ গ্রাম গোশত, ২০০ গ্রাম হাড় ও ৫০ গ্রাম চর্বি থাকবে। এ মাংসের মধ্যে মাথার গোশত, পায়া-হাড্ডি, ফ্যাপসা, কলিজা, ভুঁড়ি ও আলগা চর্বি দিতে পারবে না। এছাড়া পানিযুক্ত গোশতও থাকতে পারবে না। কোনো অসুস্থ গরুর মাংস দিতে পারবে না। এ ধরনের কিছু শর্ত থাকবে।

তিনি বলেন, ভোক্তারা তাদের অধিকার বুঝে নেবে। প্রয়োজনে আলাদা আলাদা মেপে নেবে। এতে মাংস ব্যবসায়ীরা কোনো আপত্তি করতে পারবেন না। মাংস ব্যবসায়ীরা এটা লিখিত দেবে ভোক্তা অধিদপ্তরে। এটা মনিটরিং সেলের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবে ভোক্তা অধিকার। ভোক্তা অধিদপ্তরের সভায় মাংস ব্যবসায় সংশ্লিষ্টদের একত্রে বসে দাম নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আজ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত নতুন দাম অধিদপ্তরকে জানাব। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে একই দর কার্যকর হবে, সেটাই সবার প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, মাংসের দাম ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা হতে আড়াই থেকে ৩ বছর সময় লেগেছে। কিন্তু এখন এক দিনেই ৮০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা হয়ে গেল। আরো কমবে, যদি গরুর দাম কিছুটা কমানো যায়। মাংসের দাম কমলে যদি ভোক্তা খুশি হয়, বিক্রি বাড়ে তবে সেটাই আমাদের সবার কাম্য। কিন্তু এ মুহূর্তে গরু যে দরে বেচাকেনা হয় এবং মাংস বিক্রির যে শর্ত, সেগুলো পালনসাপেক্ষে ৬৫০ টাকা কেজি সব পক্ষের জন্যই সুবিধাজনক। খামারি, মাংস বিক্রেতা এবং ভোক্তাসহ সবার কথা বিবেচনা করেই মাংসের এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে গরুর মাংসের দামসহ সবকিছুর দর ঊর্ধ্বমুখী হলেও চামড়ার দাম একেবারেই তলানিতে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মোর্তজা মন্টু বলেন, বিশ্ববাজারে চামড়ার দাম কমেনি। আগে যে মূল্যে বিক্রি হতো এখনো তাই হচ্ছে। আমাদের দেশে চামড়ার দাম কমিয়েছে সিন্ডিকেটওয়ালারা। আড়তদার ও মজুদদাররা মিলে চামড়ার দাম কমিয়েছে। সরকারের অনেক সংস্থা আছে, তারা যদি এসব আড়তদার ও মজুদদারকে শাস্তি দেয়, তাহলে চামড়ার দাম সঠিক মূল্যে ফিরে আসবে। তখন মাংসের দাম যৌক্তিকভাবে কমে আসবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close