কুমিল্লা প্রতিনিধি

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

হলফনামা বিশ্লেষণ

দান করায় সম্পদ কমেছে অর্থমন্ত্রীর

স্ত্রী, কন্যা ও নাতি-নাতনিদের দান করায় সম্পদের পরিমাণ কমেছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা হলফনামায় উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। দান করার ফলে গত ৫ বছরে নিট সম্পদ থেকে মন্ত্রীর ২৪ কোটি টাকার বেশি সম্পদ কমেছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন। মুস্তফা কামাল কুমিল্লা-১০ (কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট উপজেলা) আসনের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য। তিনি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তার গ্রামের বাড়ি জেলার লালমাই উপজেলার দুতিয়াপুরে। তিনি এ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের হলফনামায় মোট সম্পদমূল্য উল্লেখ করা হয়েছিল ৬২ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ১৫৩ টাকা। ৫ বছর পরে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত তার মোট সম্পদ দেখানো হয়েছে ৩৮ কোটি ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৬২৩ টাকা। সেই হিসাবে তার সম্পদ কমেছে মোট ২৪ কোটি ১৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩০ টাকার।

এ সময়ের মধ্যে অর্থমন্ত্রী স্ত্রী, দুই কন্যা এবং পাঁচ নাতি-নাতনিকে দান করেছেন ৩১ কোটি টাকার সম্পত্তি। তিনি স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ারের ২ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা কন্যা নাফিসা কামালকে দান করেছেন। এছাড়া স্ত্রীকে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত ৯ কোম্পানির শেয়ার বাবদ দান করেছেন ৪০ হাজার টাকা। তবে গত ৫ বছরে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মাননা বাবদ তিনি পান ৭ কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ টাকা। জমি বিক্রি থেকে তার মূলধনী লাভ ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৮৫ টাকা। গত ৫ বছরে মন্ত্রী পারিবারিক খরচ ও আয়কর বাবদ ব্যয় করেছেন ৮ কোটি ১২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬৩ টাকা। এছাড়া বর্তমানে কোনো ঋণ নেই মুস্তফা কামালের।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানের দপ্তর থেকে ওই হলফনামার তথ্য পাওয়া গেছে। হলফনামায় মন্ত্রীর বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ১ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫১৬ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার এবং শেয়ারবাজারের সঞ্চয়পত্র থেকে ২১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬৯ টাকা। বাকি টাকা ব্যবসা, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ভাতাসহ বিভিন্ন আয় থেকে আসে। ২০১৪ সালের হলফনামায় মন্ত্রীর বার্ষিক আয় উল্লেখ করা হয়েছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৪ টাকা।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, মুস্তফা কামালের নামে পোস্টাল, সেভিংস, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ ৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৬০০ এবং স্ত্রীর রয়েছে ২৫ কোটি ৫১ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৫ টাকা। যানবাহনের ক্ষেত্রে মন্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৮ হাজার ৭১৮ টাকার গাড়ি, অন্যদিকে মন্ত্রীর স্ত্রীর নামে রয়েছে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকার গাড়ি। এক্ষেত্রেও এগিয়ে মন্ত্রীর স্ত্রী। সব মিলিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে সম্মানী ভাতাসহ মন্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৪১ কোটি ৯০ লাখ ৫৩ হাজার ৭১৪ এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬২ কোটি ২৭ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮ টাকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close