নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

প্রশাসনে বদলি

ইউএনও বদলি শুরু, ওসির তালিকা চূড়ান্ত হচ্ছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আপাতত আড়াইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও বদলির প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে আট বিভাগের ৪৭ জন ইউএনও বদলির প্রস্তাবে গতকাল সোমবার সম্মতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। তবে বিভিন্ন থানার ওসি বদলির বিষয়ে একটু সময় নিতে চাচ্ছে ইসি।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৮ জন, বরিশাল বিভাগের ২ জন, খুলনা বিভাগের ৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ৬ জন, সিলেট বিভাগের ৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ৬ জন ও রংপুর বিভাগের ২ জন ইউএনওকে বদলির প্রস্তাবে এই সম্মতি দেওয়া হয়েছে ইসির পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, ইউএনও বদলিতে গতি থাকলেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদলির ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করেছে নির্বাচন কমিশন। ওসিদের বদলির তালিকা চূড়ান্ত হচ্ছে।

আরো একটু সময় নিয়ে ওসিদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায় ইসি। এজন্য সোমবার (৪ ডিসেম্বর) এই সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়েছে, সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলির প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনে ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখের পরিবর্তে ৮ ডিসেম্বর ২০২৩-এর মধ্যে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে ৩০ নভেম্বর জননিরাপত্তা বিভাগে ইসির পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসির বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে, তাদের অন্য জায়গায় বদলির প্রস্তাব ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ করা হয়। এই সময়সীমা এখন বাড়ানো হয়েছে।

ছয় মাসের বেশি এক থানায় দায়িত্ব পালনরত ওসিদের বদলি করার নির্দেশনা দিয়ে নির্বাচন কমিশন গত ৩০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বিষয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছিলেন ইসির উপসচিব মো. মিজানুর রহমান। যেসব ইউএনওদের বর্তমান কর্মস্থলে চাকরির মেয়াদ এক বছর হয়ে গেছে তাদের এবং যেসব ওসির বর্তমান কর্মস্থলে চাকরি ছয় মাসের বেশি হয়েছে তাদের বদলির প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুমোদন করে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জানাতেও বলা হয়েছিল। ইসির ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতেই ধারাবাহিকভাবে বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রশাসন সাজাচ্ছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। নির্বাচন কমিশন দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) একযোগে বদলির আদেশ দিয়েছে। এই আদেশের পর এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে, দুজন জেলা প্রশাসককে গত শনিবার বদলি করা হয়েছে।

এবার ইউএনও বদলির বিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে সম্মতি এলো। প্রশাসন সাজানোর অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পুলিশ-ডিএমপির ৩৩ থানার ওসিসহ বিভিন্ন জেলায় ওসি পদে রদবদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে লতিফুর রহমান শুরুতেই স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসনসহ ১০ সচিবকে তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে সংস্কার করেছিলেন। তিনি ধীরে ধীরে প্রশাসনকে পাল্টে দিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে দীর্ঘ দুই বছর পেয়েছিল ফখরুদ্দীন আহমদের সরকার। ২০১৪ বা ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রশাসনে বদলের প্রয়োজন হয়নি।

মাঠ প্রশাসনে বদলির কারন হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে নির্বাচন কমিশনাররা যে তথ্য পেয়েছেন তার ভিত্তিতেই ইউএনও ও ওসিদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নতুন এলাকায় গিয়ে কর্মকর্তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close