সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কারণে নির্ধারিত সময়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, আমাদের সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা আছে। এ জন্য নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই করতে হবে। এতে রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো বিভাজন থাকলে কমিশনের কোনো কিছু করার নেই। গতকাল বুধবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইসির বৈঠকে শেষে তিনি এ কথা বলেন। সভায় ইইউর ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।

সিইসি বলেন, ইইউ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। কমিশনও অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা শুরু থেকে বলে আসছে। আর সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। সভায় আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছি। তারা সন্তুষ্ট। আমাদের প্রস্তুতি অনেকটা এগিয়ে গেছে। এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে তা তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতো স্পষ্ট করে বলেছি, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য যাতে হয়, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা তাদের (ইইউ) জানিয়েছি, আমাদের নির্বাচন কমিশনাররা দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন। তারা প্রশাসন, জনগণকে এ বিষয়গুলো অবহিত করছেন, যাতে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে; যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটা নিশ্চিত হয়।

সিইসি বলেন, যত দূর বুঝেছি, তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। আমরা আমাদের যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা; একটা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা আইনত ও সাংবিধানিকভাবে বাধ্য, সেটা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি, আগেও বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের এ সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’ সিইসি আরো বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে ইসি বলেছে- রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ, বিভেদ, বিভাজন থাকে, সেখানে কোনোভাবেই ইসি হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে সুইডেন, স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানির মিশনপ্রধানসহ ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিনিধিরা হলেন- সংস্থাটির ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির এক প্রতিনিধি।

সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বৈঠকে অংশ নেন।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার টিম খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছি। আমরা আশাকরি, গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্য ও অংগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। পুরো বিশ্বও এটি দেখতে চায়। এ সময় তিনি কোনো প্রশ্ন নিতে চান না বলেও মন্তব্য করেন। তবে, সাংবাদিকরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে হোয়াইটলি বলেন, না। ধন্যবাদ।

"