নিজস্ব প্রতিবেদক
পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কাজ করে
আইজিপি
![](/templates/web-ps/images/news-logo.jpg?v=4)
নির্বাচনের সময় পুলিশ সবসময় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপির দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আসেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সেখানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, পুলিশ সবসময় পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে। নির্বাচনের সময় পুলিশ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশে দায়িত্ব পালন করে। যদি কারও কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে (রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হওয়ার) তাহলে আমাকে জানাবেন।
‘বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশ বাড়াবাড়ি করে’ বলে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আইজিপি বলেন, পুলিশ রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে। পুলিশের এ বিষয়ে ট্রেনিং রয়েছে, প্রতি ক্ষেত্রে তা ফলো করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, পুলিশে ‘গোপালগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ-বরিশাল গ্রুপ’ আছে বলে শোনা যায়। এ ধরনের গ্রুপিং পুলিশের ক্ষতি করছে কি না এবং আপনি এ বিষয়ে নজর দেবেন কি না? উত্তরে আইজিপি বলেন, আমি পুলিশের গ্রুপিং সম্পর্কে জানি না। সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে খতিয়ে দেখব।
একই কর্মকর্তাকে বারবার ঘুরে ফিরে ডিএমপির বিভিন্ন থানার ওসি বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এ প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, বদলির ক্ষেত্রে কিছু কিছু জিনিস ফলো করা হয়। শুধু পুলিশে না বিভিন্ন অরগানাইজেশানে একই লোক অনেক দিন ধরে কাজ করেন। কর্মকর্তার দক্ষতা দেখে যদি মনে করে তাকে রাখা দরকার তাহলে রেখে দেয়। আর যাকে রাখা দরকার হয় না তাকে বদলি করা হয়।
পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির রিপোর্ট ও অনেক সময় দুর্নীতির প্রতিবেদন দেখা যায়। উন্নত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে আপনি কী ভূমিকা রাখবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন এরই মধ্যে কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিট পুলিশের কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি থানায় জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য ওপেন হাউস কার্যক্রম চালু রয়েছে। মাঠপর্যায়ে সব সদস্যকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় ঘাটতি আছে সেগুলো ঠিক করা হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ৯৭ হাজার বিদেশি অবৈধভাবে বসবাস করছে। তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে রয়েছে। তারা জঙ্গিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়েছে। তারা দেশের জন্য হুমকি কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাদের বিষয়ে নিজ নিজ দেশ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস তৈরি করে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। আর যারা ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গিদের ট্রেনিং দেওয়া হয়, সেখানে সন্ধ্যার পর পুলিশ ঢুকতে ভয় পায় এরকম একটা আলোচনা আছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমরা যখন যেখানে তথ্য পেয়েছি প্রতিটি তথ্যকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই জঙ্গি হামলা হচ্ছে না। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। আপনার কাছে ট্রেনিং দেওয়ার তথ্য থাকলে জানান।
র্যাব সংস্কারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র্যাব একটি লাইভ (জীবন্ত) প্রতিষ্ঠান। এখানে সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। যেকোনো লাইভ প্রতিষ্ঠানেই তাই হয়, সবসময় এই সংস্কার চলতে থাকে।
গত শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আইজিপির পদ থেকে ড. বেনজীর আহমেদকে অবসরে পাঠানো হয়। একই দিন আরেক প্রজ্ঞাপনে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব দেয় সরকার। আর র্যাব প্রধানের দায়িত্ব পান অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।
নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পাওয়া চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ২০২০ সালের ৮ এপ্রিল র্যাব ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
"