নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শারদীয় দুর্গোৎসব

মণ্ডপে-মণ্ডপে দেবী বরণের প্রস্তুতি

শারদীয় দুর্গোৎসবের বাদ্য বাজল বলে। মহালয়ায় দেবীর আবাহন শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে এখন অপেক্ষা। দুর্গা আসছেন মর্ত্যলোকে। দম ফেলার অবসর নেই প্রতিমা শিল্পী আর আয়োজকদের। রংতুলির আঁচড় শেষে প্রতিমা মণ্ডপে নেওয়ার অপেক্ষা। বাজবে ঢাকের বাদ্য। আর, উৎসবের দিনগুলোকে নির্বিঘœ রাখতে প্রস্তুতি সেরেছে প্রশাসনও। শরতের কাশের দোলায় আর মেঘের ভেলায় বাজছে উৎসবের সুর। শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে।

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়। সেদিন কৈলাশের শ্বশুরালয় থেকে সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসেন দেবী দুর্গা। মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডি পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী দুর্গার আবাহন। চলে দেবীর চক্ষু দানের প্রস্তুতি।

আগামী ১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হবে। তবে মূলত রবিবার থেকেই পূজার্থীরা দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শোনা যায়। দুর্গাপূজার সূচনার দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হয়েছে।

সারা দেশে এ বছর ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। গত বছর সারা দেশে দুর্গাপূজার সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। এবার এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ১৬৮টিতে। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ৬টি বেশি।

শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনের আহ্বান : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হতে যাচ্ছে। এই শারদীয় উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

এক বিবৃতিতে সম্প্রীতি বাংলাদেশ জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ, যাতে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই নিজ নিজ ধর্ম নির্বিঘেœ পালন করতে পারে।

এদিকে, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- স্লোগান সামনে রেখে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। সূত্রাপুর, কোতোয়ালি, ওয়ারী, বংশাল, গে-ারিয়া থানাধীন ৬৩টি পূজামণ্ডপের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় সব পূজামণ্ডপের জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক অনুদান দেন।

মৌলভীবাজার : এ বছর সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে ১ হাজার ৭টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হবে। প্রতিমা নির্মাণ এখন শেষের পথে, মণ্ডপে নেওয়ার অপেক্ষা। পূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।

দিনাজপুর : বরাবরই বিপুল আয়োজনে উদযাপিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। করোনার কারণে গেল দুবছর সীমিত আকারে হলেও এবারে আগের রূপে ফিরছে আয়োজন। জেলার ঐতিহ্য ধরে রেখে এবারে বর্ণিল দুর্গোৎসব হবে বলে আশাবাদী আয়োজকরা।

মাদারীপুর : দুবছর সাদামাটা আয়োজনে দুর্গাপূজা হয়েছে। তবে এবারে উদ্দীপনার কমতি নেই। সাধ্যমতো চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ। দেবী দুর্গার আগমনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ সিরাজগঞ্জে। প্রতিমা শিল্পীরা খুব ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের কারুকাজে। আয়োজকরা আশা করছেন উৎসব আনন্দময় হবে।

বাগেরহাট : এখানে দেশে সবচেয়ে বেশি প্রতিমা দিয়ে দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য আলোচিত। সদরের হাকিমপুরে শিকদার বাড়িতে পূজা হতো অর্ধসহস্রেরও বেশি প্রতিমায়। কিন্তু করোনার কারণে দুবছর ধরে বড় পরিসরে হচ্ছে না। এবারও তাই। তবে জেলার সর্বত্রই চলছে দুর্গাপূজার বর্ণিল আয়োজন।

পটুয়াখালী : এখানে পূজা হবে ১৯০টি মণ্ডপে। নানা রূপে সেজে উঠছে মন্দির, মণ্ডপ ও এর আশপাশ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সব মণ্ডপে থাকছে সিসি ক্যামেরা। থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি। শারদীয় দুর্গোৎসব সার্বজনীনতায় ও সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন হবে। পূজার দিনগুলো হয়ে উঠবে রঙিন- এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close