অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ, জাককানইবি

  ১৫ মে, ২০২৪

জারুলে জুড়াই চোখ

গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবনে যখন দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হলো, তখনই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চোখে পড়ে মায়ায় জড়ানো জারুল ফুল, যা বেগুনি আভায় মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্যের সৃষ্টি করে রেখেছে। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথের দুপ্রান্ত জুড়ে এক অনন্য সৌন্দর্যের আঁচলে মুড়ে দিয়েছে জারুল। তীব্র গরমে এই সৌন্দর্য চোখ ধাঁধানোর পাশাপাশি মনের গভীরেও রেখে যায় স্নিগ্ধতার পরশ। জারুল, সোনালু, কৃষ্ণচূড়াসহ নানা ফুলে যেন নতুন আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।

জারুল গ্রীষ্মকালীন ফুল। খটখটে রৌদ্রে জারুল পাপড়ি মেলে, থাকে শরৎ পর্যন্ত। বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুলে আচ্ছাদিত করে রাখে পুরো গাছ। ছয় পাপড়ি সমৃদ্ধ জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব উদ্ভিদ। জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রমিয়া স্পেসিওজা। সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি জারুলের ভেষজ উপকারিতাও রয়েছে অনেক। জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল বেশ উপকার। পরিবেশবিদ ও উদ্যানতত্ত্ববিদরা মনে করেন, জারুলের এই ব্যাপক বিস্তার বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বায়োডাইভার্সিটি বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের পশ্চিমে, প্রবেশ পথের দুপাশে, উপাচার্য বাংলো, অগ্নীবিনা হল প্রাঙ্গণসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রান্তে জারুলের অপরূপ দৃশ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নতুন এক সাংস্কৃতিক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ আগত ফটোগ্রাফার ও পর্যটকদের কাছে জারুল এখন আকর্ষণের কেন্দ্র। জারুলের অপূর্ব সৌন্দর্য ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা দেয় এক ভিন্নমাত্রায়।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, জারুলের বেগুনি আভার মুগ্ধতায় প্রথমেই মাথায় আসে কবি আহসান হাবীবের স্বদেশ কবিতার পঙক্তিগুলো। ‘রূপসী বাংলা’র কবি জীবনানন্দ দাশও তার কবিতায় জারুলের শিল্পময় রূপকে তুলে ধরে লিখেছেন, ‘ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর-চিল একা নদীটির পাশে,/জারুলগাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে।’ ক্যাম্পাসে জারুল ফুলের মনোরম দৃশ্যের মোহে বিমোহিত হই, প্রতিদিন চোখ জুড়াই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close