reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

একুশের সুর, তরুণ প্রজন্মের মুখে

ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই ভাষা সংগ্রামীদের, যাদের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বায়ান্নর রাজপথ। একুশ শেখায় কারো কাছে মাথানত না করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা ও আত্মমর্যাদা। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে প্রেরণা পান এদেশের আপামর জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণরা। ভাষাকে নিয়ে তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আবেগ, উচ্ছ্বাস, কোনো অংশেই কম নয়। মহান ভাষার এই মাসে তরুণ শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী রিয়া মোদক

সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন ঘটাতে হবে

আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। কিন্তু দিন দিন আমরা আমাদের মাতৃভাষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। বাংলার সাথে মিশিয়ে ফেলছি ইংরেজি ভাষাকে। এতে করে আমাদের নিজেদের অজান্তেই আমরা আমাদের ভাষা ও ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া শহীদদের অবমাননা করে ফেলছি। মাতৃভাষাকে একটি দিবসের গণ্ডির মধ্যে না রেখে আমাদের উচিত সর্বত্র মাতৃভাষার প্রচলন করা। বিশেষ করে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর হলেও এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের অফিস-আদালতে আমাদের মাতৃভাষার প্রচলন করতে পারিনি। এমনকি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আমরা বাংলার পরিবর্তে ইংরেজি ভাষাকে প্রাধান্য দিচ্ছি। অথচ ১৯৫২ সালে আমাদের তরুণ-যুবকরা উর্দুর পরিবর্তে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে রক্ত দিয়েছিল। রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বত্র মাতৃভাষার প্রচলন করার মাধ্যমে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সরকার ও দেশের জনগণকে আরো দৃঢ় ভূমিকা পালন করা উচিত বলে আমি মনে করি।

মো. রাফিউল হুদা

শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

বাঙালি জাতিসত্তার আত্মপরিচায়ক অমর একুশ ফ্রেব্রুয়ারি

একুশ মানেই প্রেরণা, একুশ মানেই স্বাধীন ‘বাংলার’ অস্তিত্বে মাতৃভাষার নাম। একুশ মানেই রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকতের রক্তে কেনা স্বাধীন ভাষার নাম। শোষকের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, খন্ডিত অধিকারের বিরুদ্ধে সামগ্রিক অধিকার ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির চিরন্তন সংগ্রামের স্মারক এই দিনটি। ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বাঙালি জাতীয়তাবাদের বীজ বপন করা হয়। জাতীয়তাবাদের চেতনায় এই দিনটি চেতনাদীপ্ত ও গৌরব উজ্জ্বল স্মৃতি বিজড়িত একটি দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একুশের চেতনায় সবার পথ এসে মিলেছে এক অভিন্ন গন্তব্যে। তাই এ দিনটি আমাদের মাঝে অধিকার-চেতনা নিয়ে আসে। বর্তমানে বাংলা ভাষায় শব্দের অপব্যবহার এই ভাষার গৌরবোজ্জ্বল সমৃদ্ধিকে মলিন করছে। জীবনের প্রতিটি স্তরে বাংলা ভাষার সুষ্ঠু ও সাবলীল ব্যবহারই বাংলা ভাষাকে বিশ্বদরবারে সমুন্নত রাখবে, বাঙালি জাতিকে এই প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই আমরা একটি সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর জাতি হিসেবে বিশ্বে সমাদৃত হব।

মো. ফাহাদ হোসেন

শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ভাষার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মকেই নিতে হবে

ফেব্রুয়ারি একদিকে যেমন বাঙালির জন্য শোকের তেমনই অহংকারের আর গৌরবের। মহান ২১ ফেব্রুয়ারিতে দামাল ছেলেদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা সারা বিশ্বে মর্যাদা লাভ করেছে। বিশ্বব্যাপী এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়। বাংলা ভাষার আছে নিজস্বতা। কারণ এই ভাষা পরিপূর্ণ। তবে কতজনই বা চর্চা করছি মাতৃভাষাকে শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করার জন্য সেটা এখন চিন্তার বিষয়। বিশুদ্ধ ভাবে উচ্চারণ করা মানে আঞ্চলিক ভাষাকে উপেক্ষা করা নয়। বরং নিজের মায়ের ভাষার চর্চা। যেখানে বিদেশী ভাষার অপ্রয়োজনীয় মিশ্রণ থাকবেনা। যে ভাষার জন্য আমাদের এত আত্মত্যাগ, তার মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মকেই নিতে হবে।

ইউছুব ওসমান

শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

মাতৃভাষা আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি

ভাষা দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে বাংলাভাষী মানুষ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন বহু ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। তাদের ত্যাগ ও আত্মত্যাগের স্মরণে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এই দিনটি পালন করি। ভাষা আমাদের চিন্তা-ভাবনার বাহন, জ্ঞানের চাবিকাঠি এবং সংস্কৃতির বাহন। মাতৃভাষা আমাদের অস্তিত্বের ভিত্তি। ভাষা শহীদদের ত্যাগ আমাদের সবাইকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের মাতৃভাষা আমাদের অধিকার। ভাষা দিবস আমাদের সবাইকে মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করার সুযোগ করে দেয়। আমাদের মাতৃভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

এনিভা এলিজ

শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close