![reporter](/templates/web-ps/images/rp_icon.png)
প্রথম বিসিএসেই পুলিশ ক্যাডার হওয়ার গল্প শোনালেন অর্ক
![](/assets/news_photos/2023/11/28/image-428223.jpg)
৪১তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ফলাফলে প্রথম বিসিএসেই সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থী ফেরদৌস মেহবুব (অর্ক)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়রিং (আইপিই) বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ফেরদৌস মেহবুব মাগুরা সদর উপজেলার নতুন বাজার ইউনিয়নের সাহাপাড়া গ্রামের মো. জামিউল কদর ও শাহনাজ বেগম দম্পতির সন্তান। তিনি মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং সরকারি হোসেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মাগুরা থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। তার বিসিএস জয়, নতুনদের জন্য পরামর্শ ও সফলতার গল্প শুনিয়েছেন প্রতিদিনের সংবাদকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রতিদিনের সংবাদের যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. ওয়াশিম আকরাম
কখন থেকে বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করলেন?
আমার স্নাতকের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হয় ২০১৯-এর জানুয়ারি মাসে। তখন আমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছিলাম। পরে ২০১৯-এর জুলাই মাসে চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুর করি।
প্রিলি, ভাইভা ও রিটেন নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
প্রিলিমিনারি পরীক্ষাটা আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন মনে হয়েছে। আমার কাছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা থেকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করা সহজ মনে হয়েছে। তবে রিটেন পরীক্ষা দিতে শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রম বেশি হয়। আর ভাইভা অনেকটা নিজের ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। তুমি ভালো প্রস্তুতি নিয়েও অনেক সময় ভাইভায় ভালো নাও করতে পারো, আবার অনেক সময় প্রস্তুতি ছাড়াও ভালো করা যায়।
এমন কোনো অভিজ্ঞতা আছে কি, যা আপনাকে সফল হতে প্রেরণা দিয়েছিল?
চাকরিতে থাকার সময় আমার এক সহকর্মীর বাবা মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার জানাজায় গিয়ে দেখি একজন সহকারী ভূমি কমিশনার স্যার ও তার সঙ্গে কিছু পুলিশ সদস্য তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিতে এসেছিলেন। ওই এসি ল্যান্ড স্যারের সামাজিক সম্মানের জায়গা দেখে আমি নিজেও এই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হই। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র নাজমুল ভাইয়ের বিসিএস সফলতা দেখেও অনুপ্রাণিত হই।
আপনার জীবনের মূলমন্ত্র কী ছিল?
সিনসিয়ারিটি, ডেডিকেশন এবং সিরিয়াসনেস, এই হলো আমার জীবনের মূলমন্ত্র।
স্কুলজীবনটা আমার কাছে এখনো স্বপ্নের একটা অধ্যায়। শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পণ করেছি এ সময়ে। স্কুলে স্যারদের ভালোবাসা ও শাসন আজকে আমাকে মানুষ হতে সাহায্য করেছে। এ ছাড়া ওই সময়কার বন্ধুরা এখনো আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমার বিসিএস জীবনে সফলতার অন্যতম কারিগর আমার স্কুলেরই এক বন্ধু যে এখন ৪০তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিরত। কলেজ জীবনটা মাত্র ২ বছরের, যা স্বপ্নের মতো কেটেছে। বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে টিচারদের ব্যাচে পড়তে যাওয়া, খুনসুটি ও গ্রুপ স্টাডি এখনো স্বপ্নের মতো মনে হয় আমার কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বেশ কিছু স্মৃতি মনে পড়ে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনেই বড় ভাইদের সঙ্গে পরিচয়। সিনিয়রদের সঙ্গে ও স্যারদের সঙ্গে প্রথম ক্রিকেট খেলা। সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে অনেক বন্ধু পাওয়া। একসঙ্গে ভ্রমণে যাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে পিঠা উৎসব করা। বিভাগের অনুষ্ঠানগুলো কীভাবে আয়োজন করতে হয়, সেগুলো হাতে-কলমে শিখেছি আমাদের বড় ভাইদের কাছে, যা আমাকে ব্যবস্থাপনার শিক্ষা দিয়েছে। স্যার-ম্যামদের কাছে শিখেছি কীভাবে যেকোনো কাজ একাগ্রতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হয়, যা আজকে আমার সফলতার পেছনে অন্যতম শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
এখন আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে রাঙ্গ্রযন্ত্রের কাজে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।
বিসিএস দিতে ইচ্ছুকদের উদ্দেশে আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
যারা নতুন বিসিএস দিতে ইচ্ছুক তাদের উদ্দেশে আমার পরামর্শ হলো, তারা যেন স্নাতক শেষ করেই বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। এখানে সফল হতে হলে ধৈর্য ও একাগ্রতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো পরিস্থিতিতেই যেন তারা ভেঙে না পড়ে, নিজের লক্ষ্যকে স্থির রেখে সেই অনুযায়ী কাজ করে। সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস রেখে একাগ্রতার সঙ্গে যেকোনো ভালো কাজ করতে পারলেই সেখানে সফলতা আসবে।
"