আতিক উল্লাহ আল মাসউদ, আইআইইউসি

  ২৮ নভেম্বর, ২০২৩

দ্যুতি ছড়াচ্ছে আরবি বিভাগ

চট্টগ্রামে পাহাড়ঘেঁষা সবুজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমবর্ধমান আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমে বারবার আন্তর্জাতিক বিশ্বে নজর কেড়েছে। একদিকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে, অন্যদিকে ধর্মীয় ধারায় আকর সিলেবাস ও উন্নতমানের পাঠদানের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে নিজেদের অবস্থান নির্ণয় করতে পেরেছে। আয়োজিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে গুণিজনরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও পাঠদানের কারিকুলামকে ভূয়সী প্রশংসায় উদ্বেলিত করে। সম্প্রতি সময়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের বিভিন্ন অতিথিদের দৃষ্টিতে প্রবলভাবে একটি বিভাগ দ্যুতি ছড়িয়েছে। সে বিভাগের নাম ‘আরবি ভাষা ও সাহিত্য।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের আটাশ বছর চলার পথে এই বিভাগটি একেবারে নতুন। গত বছর ২০২২ সালে অধ্যাপক আতাউর রহমান নদভী ও অধ্যাপক মাহমুদুল হাসানের হাত ধরে বিভাগটির যাত্রা শুরু করে। খুবই স্বল্প সময়ের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয় ও অতিথিদের নজরকে আলোড়িত করেছে। এর কারণ হলো বিভাগটি দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মক্কা, মদিনা, আল-আজহার, নদওয়াতুল উলামা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসের সঙ্গে মিল করে যুগোপযোগী বক্ষ্যমাণ করে সিলেবাস সাজানো হয়েছে।

সাহিত্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীর প্রেম সহজাতভাবে মনন থেকে অনিবার্য রূপে নিঃসৃত হয়। সাহিত্য হৃদয়কে আন্দোলিত করে। শিক্ষার্থীদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর অন্যতম মাধ্যম হলো সাহিত্য চর্চা করা। সে সাহিত্য যদি আরবির সঙ্গে মিশ্রিত হয় তবেই সোনায় সোহাগা। কারণ বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের কবিরা সাহিত্যকর্ম চর্চায় আরবির প্রতি ঝোঁকে ছিল। এর উপযুক্ত কারণও বিদ্যমান। জাহিলি যুগ ছিল আরবি সাহিত্যের জয়জয়কার সোনালি যুগ। সে যুগে কবিরা যে সাহিত্য কর্ম রেখে গেছে তা আধুনিক যুগের পাঠ্যসূচিতেও চর্চিত বিষয়। এই সাহিত্যের গতিময়তাকে ধরে রাখতে আইআইইউসিতে আরবি বিভাগ ধ্রুপদি ভূমিকা রাখছে। সভা সেমিনার ও বিভিন্ন দিবসে আরবি ভাষার শিক্ষার্থীরা সাহিত্য উপকরণ নিয়ে তারা বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে।

ফলে আরবির মহিমায় বিভাগটি ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। শুধু সাহিত্যের বিবেচনায় নয়, বিভাগটি রচনা করেছে জীবন ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার পথ। এর রয়েছে কর্জে হাসানা ফান্ড, সাংস্কৃতিক দল, নিজস্ব লাইব্রেরি এবং দেয়ালিকা প্রদর্শন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কার্যক্রমে বিভাগটির সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অপ্রতিরোধ্য এক স্বাক্ষর রেখেছে বিভাগটি। চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানের আয়োজিত প্রতিযোগিতায় একচ্ছত্র দাফট দেখে এখন সবার চক্ষু চড়কগাছ। পাঠদানের ক্ষেত্রে অভিনব পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের মননে কঠিনকে সহজ ভাষায় রূপায়ণ করার কারণে তৈরি হয়েছে উদ্দীপনা ও উৎসাহ।

এত সহজ ও সাবলীল ভাষায় আরবিকে মাতৃভাষার পদ্ধতিতে রপ্ত করা যায় এমন কায়দা দেখে সবাই বিমোহিত। স্বল্প সময়ের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্ছ্বাসের জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কোনো মেহমান এলে সে সর্বপ্রথম আরবি বিভাগের দিকে এগিয়ে চলে। কারণ প্রচার মাধ্যমে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের শ্রবণে এই বিভাগের সফলতার কথা পৌঁছে গেছে। এসবের মূলে রয়েছে শিক্ষকদের আন্তরিকতা। বিভাগটির সূচনালগ্ন থেকে শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি নিজেদের উপার্জনের মাধ্যমে প্রদান করে চলছে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজের খরচ নিজে বহন করে থাকে। এর পেছনে শিক্ষকদের সহযোগিতা ও উৎসাহ ছিল প্রণিধানযোগ্য।

শিক্ষকরা প্রায় সময় বলত, তোমাদের খরচ তোমরা বহন করার চেষ্টা করো। কার্যত অর্ধেক শিক্ষার্থীর খরচের দ্বার উন্মোচন

করেছে বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। জ্ঞান উৎপাদনের ক্ষেত্রে সগৌরবে এগিয়ে চলছে অত্র বিভাগ। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই বাংলাদেশে আরবি সাহিত্যের গতিময়তা বৃদ্ধি পাবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close