আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ জুন, ২০২৪

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস

রাশিয়া ছাড়া সবার সম্মতি * স্বাগত জানাল হামাস * মানছে না ইসরায়েল

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্টে জো বাইডেনের দেওয়া গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সোমবার পাস হয়েছে। এই প্রস্তাব পাস হওয়ার পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি প্রতিনিধি বলেছেন, তারা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবে এবং হামাস উপকৃত হয় এমন কোনো অর্থহীন আলোচনায় অংশ নেবে না। গতকাল মঙ্গলবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ৩১ মে গাজায় যুদ্ধবিরতি-সংক্রান্ত তিন ধাপের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। সোমবার নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ সদস্যই এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। শুধু রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।

সোমবার এই প্রস্তাব পাস হওয়ার পর জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি রুট শাপির বেন-নাফতালি বলেন, ইসরায়েল এটি নিশ্চিত করতে চায় যে, গাজা ভবিষ্যতে ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না। এ জন্য ইসরায়েল আপাতত তার লক্ষ্যগুলো পূরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ইসরায়েলের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং হামাসকে সমূলে ধ্বংস করা। এই লক্ষ্যগুলো পূরণ হলেই যুদ্ধ শেষ হবে। তার আগে নয়।

বেন নাফতালি আরো বলেন, ইসরায়েল তার নীতির ওপর অটল রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সব জিম্মি উদ্ধার না হবে এবং হামাসের সামরিক ক্ষমতা বিলুপ্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব। যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে এটিই আমাদের লক্ষ্য ছিল।

ইসরায়েল আর কখনোই হামাসকে পুনর্গঠিত হতে দেবে না উল্লেখ করে ইসরায়েলের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘গাজা যাতে ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে, সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে চাই। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, হামাস উপকৃত হয় এমন কোনো অর্থহীন ও অন্তহীন আলোচনায় ইসরায়েল অংশ নেবে না। তবে এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে ব্যাপারে তারা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক।’

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে প্রায় ৩০০ ফিলিস্তিনি। এ নিয়ে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ১১২ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ৮ মাসের এই ইসরায়েলি অভিযানে আহতের সংখ্যা সাড়ে ৮৪ হাজার।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থীশিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। আট মাসের ইসরায়েলি অভিযানে ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা নিজেদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close