আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৩ মে, ২০২৪

ভারতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার খরা উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক দলগুলো

চিন্তায় বিজেপি। উদ্বিগ্ন বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটও। ভোটের ভারতে কারণ একটাই। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের মতো চলতি লোকসভা নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে এবার আর সেই উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। গতবারের তুলনায় ভোটের হারও অনেকটাই কম। কেন ভোট কম পড়ছে বা ভোট কোনদিকে পড়ছে? সর্বত্রই এবার যেন নীরবতা। যার জেরে বিজেপি জোট এনডিএ বা ইন্ডিয়া দুপক্ষই উদ্বিগ্ন।

ভোট বিষয়ে এবারের মতো ভারতবাসী এর আগে এতটা নীরব থাকেনি। গত নির্বাচনগুলোয় তাদের মধ্যে ভোট উৎসবে, যে উৎসাহ দেখা গিয়েছিল তাতে রাজনৈতিক দলগুলো একটা ধারণা করতে পেরেছিল। কিন্তু ২০২৪ নির্বাচন কোনো ধারণাই ভোটারদের থেকে পাচ্ছেন না তারা। কারণ প্রথমত এবার ভোট কম পড়ছে। আর দ্বিতীয় দেশবাসী ভোট বিষয়ে অদ্ভুত রকম চুপ। ফলে দ্পুক্ষই অকেটাই উদ্বিগ্ন।

কেন দেশবাসীর মধ্যে অস্বস্তিকর নীরবতা? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দলগুলোর অন্দরে। তবে বেশি চিন্তিত যেন বিজেপি। এর মধ্যে গত সোমবার শেষ হয়েছে পঞ্চম ধাপের ভোট। সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ ধাপ ভোট হবে আগামী ২৫ মে। সপ্তম অর্থাৎ শেষ ধাপের ভোট হবে ১ জুন। একযোগে ফলাফল প্রকাশ হবে আগামী ৪ জুন। গত ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছিল প্রথম ধাপের ভোট।

বাকি দুধাপের ভোটের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে নড়েচড়ে বসেছে বিজেপির শীর্ষস্তরের নেতৃত্বে। সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। দলের সব সাধারণ সম্পাদক ও উচ্চ স্থানীয়দের নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন নাড্ডা। ভোটের মধ্যে বিজেপির এমন স্ট্র্যাটেজি বৈঠক এক কথায় নজিরবিহীন।

বৈঠকে অন্যতম আলোচ্য ছিল, ভোট শতাংশ হারে কেন এত ধস নামছে? শহর কিংবা গ্রাম, ভোট কেন কম পড়ছে? সেটা জানার জন্য দ্বিতীয় ধাপের ভোটের পরই, বিজেপি বিভিন্ন রাজ্যগুলোকে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলেছিল। বিজেপির কাছে চিন্তার কারণ হলো, তিন বছর ধরে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে বুথ স্তরের সংগঠনে। বুথস্তর কমিটি গঠন এবং তাদের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দিয়েছিল। কিন্তু বিজেপির নিজের ভোটব্যাংক যেখানে শক্তিশালী, সেই রাজ্য এবং লোকসভা আসনগুলোয় কেন ভোটাররা বুথমুখী হচ্ছেন না?

দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা মনে করছে, বিজেপির বুথস্তরের কর্মী ও নেতারাই ভোটারদের বুথে নিয়ে আসতে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রতিটি ভোটপর্বেই দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের তুলনায় বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের হার কমেছে। সব থেকে বিস্ময়করভাবে কম ভোট পড়েছে মহারাষ্ট্রে। রাজ্যটিতে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৯ শতাংশ। মহারাষ্ট্র নিয়ে এবার ইন্ডিয়া এবং এনডিএ- দুপক্ষই আশা-আশঙ্কার স্রোত প্রবলভাবে বইছে। সেখানেই ভোটের হার কম কেন? প্রথম ধাপে ভারতে ভোট পড়েছে ৬৬.১৪ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ৬৬.৭১, তৃতীয় ধাপে ৬৫.৬৯ , চতুর্থ ধাপে ৬৯.১৬ এবং পঞ্চম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০.০৯ শতাংশ। ফলে বিজেপির এই আশঙ্কা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি শিবিরে কোনো ইস্যুই এবারের নির্বাচনকে দেশব্যাপী প্রভাবিত করতে পারছে না। এই প্রথম বিজেপির কোনো স্লোগান ভোটের ময়দানে সেভাবে সাড়া জাগাতে পারছে না। মোদির ‘গ্যারান্টি’ও না।

একই দশা বিজেপিবিরোধী দলগুলোয়ও। তাদের নিজেদের মধ্যেই কোনো সামঞ্জস্য নেই, যে বার্তা দিয়ে গত বছর ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close