প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ মে, ২০২৪

ফের ক্ষমতায় আসছেন মোদি তবু চাপে বিজেপি সরকার

ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনে সাত দফার মধ্যে তিন দফার ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ৭ মে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের পরই হিসাব মেলানো শুরু করেছে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যম ও টেলিভিশনগুলোর বিভিন্ন টকশোতে দাবি করা হচ্ছে, তিন দফার ভোটে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স তথা এনডিএ জোট খুব একটা সুবিধানজনক অবস্থানে নেই। বিভিন্ন মহল থেকে এমনটাও বলা হচ্ছে, ধর্মীয় মেরূকরণ, ব্যাপক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সেগুলোর বাস্তবায়ন না করা বা করতে না পারা এবং সর্বোপরি শিল্পপতি ও বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মোদির ঘনিষ্ঠতায় বিজেপির ভোটবাক্সে টান পড়েছে।

প্রথম দু-দফায় ১৯০ আসনের মধ্যে বিজেপির বিদায়ি সংসদ সদস্যদের আসন ছিল ৯৭টি। আর তৃতীয় দফার ৯৩ আসনের মধ্যে সিংহভাগ আসনই বিজেপির জেতা আসন। তিন দফায় ২৮৩ আসনের মধ্যে আগের জেতা আসনগুলো ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে দেশটির গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ।

তাদের দাবি, হিন্দু-মুসলিম ইস্যু তুলে ধর্মীয় বিভাজন ছাড়াও মোদি সরকারের সঙ্গে আদানি-আম্বানিদের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠতাকে সাধারণ ভোটাররাও নেতিবাচকভাবে দেখছেন। সে কারণেই তিন দফায় গড় ভোট ৬২ শতাংশ ছাড়ায়নি। যেখানে, ২০১৯ সালেও তিন দফার গড় ভোট ছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ। তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত রাজ্যগুলোর লোকসভার আসনগুলোতে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়েছে। আসামের ধুবড়ীতে ভোট পড়েছে ৮৫ শতাংশ। আসনটিতে যেখানে প্রায় ৩৫ শতাংশ মুসলিম ভোট, সেখানে ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, জঙ্গীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ মালদা মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। এই আসনগুলোর প্রত্যেকটি আসনেই সংখ্যালঘুরা ভোটের ফলাফল নির্ধারণ করেন। একইভাবে দ্বিতীয় দফার ভোটে কেরালায় ভোটের ৪৫ শতাংশই মুসলিমণ্ডখ্রিস্টান সম্প্রদায়ের। রাজ্যটিতে ভোট পড়েছে ৭২ শতাংশ। এখানে কংগ্রেস তথা ইন্ডিয়া জোটের ফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল।

স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর টকশোতে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধেই সমালোচনা বেশি শোনা যাচ্ছে। তবে ইন্ডিয়া জোটের ঐক্য না হওয়া নিয়েও বেশ সমালোচনার মুখে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলো।

অনেকেই বলছেন, ভোট সামনে রেখে বিজেপি রামমন্দির ইস্যুতে যেমন গুরুত্ব দিয়েছে, সেভাবে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। টানা দশ বছরের শাসনকালেও বিভিন্ন রাজ্যে সামগ্রিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণের ইতিবাচক সাফল্য নেই মোদি সরকারের।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই-ইডি দিয়ে বিরোধী দলগুলোর নেতা-নেত্রীদের গ্রেপ্তার ইস্যুটিও অনেকে প্রতিহিংসামূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন। তবে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে, তিন দফায় ২৮৩ আসনের মধ্যে বিজেপি খুব ভালোসংখ্যক আসনই পাবে। তিন দফায় ভোটই দলের ৪০০ আসনের যে লক্ষ্য সেটা পূরণে বড় ভূমিকা পালন করবে বলেও দাবি করছেন বিজেপির নেতারা।

ভোট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ভোটাররা তেমন সাড়া দেননি। তৃতীয় দফায়ও তারা সাড়া দেবেন বলে আগেই অনুমান করেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দু-দফার ভোটে সার্বিকভাবে উপস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও কম। আর সে কারণেই মুখে না বললেও বিজেপির অন্দরমহলেও চাপ বাড়ছে। প্রথম তিন দফায় বিজেপির চেয়ে কিছুটা হলেও কংগ্রস এককভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close