প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো টার্গেট ইসরায়েলের

দিন দুয়েক আগেই ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চালানো এ হামলার পর ‘বল’ এখন ইসরায়েলের কোর্টে এবং হামলার জবাবে ইসরায়েলও প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজছে। এ অবস্থায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে পারে ইসরায়েল- এমন আশঙ্কার কথাই জানিয়েছেন জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ প্রধান। এছাড়া হামলার শঙ্কার কারণে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ প্রধান সোমবার বলেছেন, ইসরায়েল সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এবং এ বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। যদিও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ইরানের স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শনের কাজ গতকাল মঙ্গলবার আবারও শুরু হবে।

সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইরান এই হামলা চালায়। যদিও বেশির ভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরো বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।

মূলত গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। এর বেশির ভাগই ইরানের অভ্যন্তর থেকে নিক্ষেপ করা হয়। তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী।

নজিরবিহীন সেই হামলার পর ইসরায়েলের সামরিক প্রধান সোমবার বলেছেন, তার দেশ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার জবাব দেবে। যদিও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান অবশ্য বলেছেন, ইসরায়েলের পাল্টা যেকোনো আক্রমণকে ‘শক্তিশালী’ এবং ‘বিস্তৃত’ জবাব দিয়ে মোকাবিলা করা হবে।

এমন অবস্থায় আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, ইরান ‘নিরাপত্তা বিবেচনায়’ রবিবার তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং সোমবার সেগুলো আবার চালু হলেও ‘যতক্ষণ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত না হচ্ছে’, ততক্ষণ তিনি আইএইএ পরিদর্শকদের সেখান থেকে দূরে রেখেছেন।

গ্রোসি নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আবারও এটি শুরু করতে যাচ্ছি। এটি আমাদের পরিদর্শন কার্যকলাপের ওপর প্রভাব ফেলেনি। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে গ্রোসি বলেন, আমরা সবসময় এ হামলার আশঙ্কা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতিতে তিনি ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

দাঁতভাঙা জবাব দেবে ইরান : এদিকে পাল্টা আক্রমণ এলে জবাবও মিলবে দাঁতভাঙা। এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তেহরানের ঢাকার দূত। দেশটি রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোসি বলেন, ইসরায়েল যদি আবার দুঃসাহসিক কোনো ঘটনা ঘটায় তবে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে এবং এর দায়-দায়িত্ব বর্তাবে স্বয়ং ইসরায়েল ও তাদের সহযোগীদের ওপর।

তিনি আরো জানান, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল নেতানিয়াহু প্রশাসনকে সতর্ক করা। মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিসহ সার্বিক পরিস্থিতির কথা ভেবেই, ইসরায়েলে হামলা করা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরান ইসরায়েলের সহযোগী দেশগুলো রয়েছে, তাদের যে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে তা হলো, এ আক্রমণ আরো কঠিন হওয়ার কথা ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের কথা এবং বিশ্ব পরিস্থিতিক কথা চিন্তা করে ইরান সর্বনিম্ন পদক্ষেপটিই নিয়েছে।

আইএইএ নিয়মিত ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করে থাকে। ইরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, কিন্তু পশ্চিমা শক্তিগুলো তেহরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টার অভিযোগ এনেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close