কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ১২ জুন, ২০২৪

মিয়ানমার থেকে ট্রলারে ফের গুলি

সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী দুটি ট্রলার ও কয়েকটি স্পিডবোট লক্ষ করে মিয়ানমারের ওপার থেকে আবারও গুলি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ গুলির ঘটনা ঘটে। ফলে টেকনাফগামী ট্রলার ও স্পিডবোটগুলো আবার সেন্টমার্টিনে ফিরে যায়। সাত দিন ধরে চলছে একই ধরনের ঘটনা। সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গতকাল সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী দুটি ট্রলার ও কয়েকটি স্পিডবোটকে লক্ষ করে মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি ছোড়া হয়। এতে ওই নৌযানগুলো টেকনাফ না গিয়ে আবারও সেন্টমার্টিনে ফিরে আসে। আতঙ্কে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা চরম সংকটে রয়েছেন। জানা যায়, এই দ্বীপে বসবাস করেন ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দা। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ায় বাসিন্দাদের খাদ্য ও নিত্যপণ্য আসে টেকনাফ থেকে। আর নৌযানই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রতিদিন ট্রলারে করে দ্বীপের বাসিন্দারা আসা-যাওয়া করে। একই সঙ্গে খাদ্যপণ্য পরিবহনেও ব্যবহৃত হয় ট্রলার।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই সংঘাত চলছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে। এর জেরে এখন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে ছোড়া হচ্ছে গুলি। এরই মধ্যে গত ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলি ছোড়া হয় মিয়ানমার থেকে। এতে ট্রলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হননি। এরপর ৮ জুন পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলি করা হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে সাতটি গুলি লাগে।

দ্বীপের বাসিন্দা আবদুর রহিম জিহাদী বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদীর মোহনা শেষে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা দিয়ে পার হওয়ার সময় মিয়ানমারের থেকে দ্বীপে যাতায়াত করা বোটগুলোকে লক্ষ করে গুলি ছোড়া হয়। এ কারণে মানুষ প্রাণের ভয়ে পারাপার হতে চায় না। তবে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী, নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। গত কয়েক দিনে ২ থেকে ৩টি বোটে এ রকম আক্রমণ চালানো হয়। পরে বোট চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকরা।

সেন্টমার্টিন স্পিডবোট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে মানুষ ভয়ে আছে। ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা বা রুটও নেই।

প্রতিদিন সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌ রুটে ৪টি ট্রলার ও ৬টি স্পিডবোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করে। খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মিয়ানমার থেকে ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। তাই ওই নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close