শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

  ১১ জুন, ২০২৪

শৈলকুপা থানায় হামলা

জড়িতদের ধরতে অভিযান গ্রেপ্তার ১৫

ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় হামলা করে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় ১১৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৫০০ জনকে বেনামি আসামি করে শৈলকুপা থানায় মামলা করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাতে পুলিশের উপপরিদর্শক লাল্টু রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। গত রবিবার বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর গতকাল রাতেই শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা আসামিদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, থানায় হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় রাতে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার মামলায় ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ধাওড়া গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগের কর্মী মুস্তাক শিকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী একটি মারামারি মামলার ৪৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। গত ২৩ মে মামলা করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রবিবার কয়েকশ লোক শৈলকুপা থানা ঘেরাও করে। এ সময় তারা থানায় ইট পাটকেল ছুড়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি নিক্ষেপ করে। এ সময় পুরো থানা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে হামলা পাল্টা হামলা। এতে পাঁচ পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন বেশ কয়েকজন। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

জানা যায়, পেশায় ঠিকাদার ব্যবসায়ী মুস্তাক শিকদার আওয়ামী লীগের কোনো পদ-পদবীতে না থাকলেও আওয়ামী লীগের একাংশের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। তিনি ঝিনাইদহ-১ আসনে (শৈলকুপা) উপনির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী আওয়ামী লীগের প্রার্থী নায়েব আলী জোয়ারদারের সমর্থক ছিলেন। এ ছাড়া ২১ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী মোস্তাফা আরিফ রেজা মুন্নু সমর্থক ছিলেন তিনি।

এ ঘটনায় ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিমণ্ডউল-আহসান সাংবাদিকদের বলেন, একদল দুর্বৃত্ত একত্রিত হয়ে থানার এজাহারভুক্ত আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তাদের নিবৃত্ত করে। তিনি বলেন, কারা এই কাজটি করেছে তা ভিডিও ফুটেজে দেখতে পেয়েছি। এ ঘটনার পেছনে কাদের ইন্ধন আছে সে বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এদিকে এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খুলনা ও ঝিনাইদহ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ শৈলকুপা থানায় মোতায়েন করা হয়েছে। তারা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, মানুষের নিরাপত্তার স্থল থানাতে যদি এরকম হামলা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়। অন্যদিকে, সচেতন মহল বলছেন থানায় হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এর পেছনে যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি করছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close