অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা
দেশে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা
![](/assets/news_photos/2024/06/07/image-461025.jpg)
দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। গত ডিসেম্বরেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। তবে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত খেলাপি ঋণের হালনাগাদ তথ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। ফলে মাত্র তিন মাসেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৬ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে এত বিশাল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আগে কখনো হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণিভুক্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি। অর্থাৎ মোট বিতরণকৃত ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ খেলাপি হয়েছে। গত বছর এটা ছিল ৯ শতাংশ।
এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৩ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৮৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ২৭ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা যা বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২১ শতাংশ।
অপরদিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ১২ লাখ ২১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়েছে ৮৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭০ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। এটি ছিল তখনকার সময়ের মোট বিতরণকৃত ঋণের ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
আবার বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ৬৬ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ডিসেম্বরে এটা ছিল ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। এছাড়া বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণ ৪০ হাজার ৩২ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাস আগে এটা ছিল ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেলেও তা খুব মারাত্মক আকার ধারণ করে না, যদি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের বিপরীতে যথাযথ প্রভিশন রাখে। কিন্তু এই ক্ষেত্রেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখার দরকার ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। কিন্তু ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই প্রভিশনের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজা ৮৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ২৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
তবে মন্দের মধ্যেও কিছুটা আশা দেখিয়েছে মন্দ ঋণের হার। আগে এই মন্দ ঋণের হার ছিল ৮৭ শতাংশ। বর্তমানে তা ৮৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
"