শাহ্ আলম খান, চাঁদপুর

  ২৪ মে, ২০২৪

লোকবল সংকটে ৫ স্টেশন বন্ধ

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ ৫১ কিলোমিটার

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ ৫১ কিলোমিটার। চাঁদপুর অংশে স্টেশন আছে ১১টি। এর মধ্যে সচল আছে ৬টি। লোকবলের অভাবে বাকি ৫টি রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক সময় বাণিজ্যিকভাবে মাল পরিবহনের জন্য ট্রেন থাকলেও এখন বন্ধ। মাল পরিবহনের ওই রেললাইনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় অবৈধ দখলে চলে গেছে।

সম্প্রতি চাঁদপুর সদর উপজেলার রেল এলাকা ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। চাঁদপুর স্টেশন মাস্টারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এক সময় চাঁদপুর-লাকসাম, চট্টগ্রাম, ভৈরব ও সিলেটের মধ্যে ৮টি ট্রেন চলাচল করত। কিন্তু এখন মাত্র দুটি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে দুটি ট্রেনই চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চালু রয়েছে। একটি হচ্ছে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস এবং অপরটি সাগরিকা এক্সপ্রেস। বাকি লোকাল ৬টি ট্রেনই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে বেসরকারি ব্যবস্থপনায়।

চাঁদপুর অংশে রেলস্টেশন রয়েছে লাকসামের দিক থেকে চিতষী, মেহের, শাহরাস্তি, ওয়ারুক, হাজীগঞ্জ, বলাখাল, মধুরোড, শাহতলী, মৈশাদী, চাঁদপুর কোর্ট ও চাঁদপুর বড় স্টেশন। এর মধ্যে কার্যক্রম চালু আছে চিতষী, মেহের, হাজীগঞ্জ, মধুরোড, চাঁদপুর কোর্ট ও চাঁদপুর বড় স্টেশন।

মৈশাদী রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দারা জানান, আমাদের মৈশাদী রেলস্টেশনে কখনোই সরকারি লোকবল ছিল না। যখন লোকাল ট্রেন চলাচল করেছে, তখন স্বেচ্ছাশ্রমে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা ছিল। স্টেশন আছে জনবল নেই। এখন দুটি ট্রেন চলাচল করে এরই মধ্যে সাগরিকা এক্সপ্রেসে মৈশাদী স্টেশন থেকে যাত্রী চলাচল করতে পারছে। টিকিট কিনতে হয় ট্রেনে উঠার পরে।

পরিত্যক্ত রেলাইনগুলো হচ্ছে চাঁদপুর শহরের ছায়াবানী মোড় থেকে জেলা খাদ্য গুদাম পর্যন্ত এবং চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে পদ্মা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানির ডিপো পর্যন্ত। পরিত্যক্ত রেললাইন এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা বেপারী বলেন, গত প্রায় ২০ বছর দুটি ওয়েল স্টেশনে ট্রেনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আসে না। এখন নদী পথে আসে।

চাঁদপুর পৌরসভার জামতলা এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসীয় শাহজাহান বলেন, আমি এই এলাকায় দীর্ঘদিন ব্যবসা করি। একসময় সার, কীটনাশকসহ অনেক পণ্যই মালবাহী ট্রেনে আসত। এখন মালবাহী ট্রেনের পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। যে কারণে এখানকার রেললাইন পরিত্যক্ত এবং অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে।

চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) সোয়াইবুল সিকদার বলেন, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ৫১ কিলোমিটার অংশে ১১টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি চলমান এবং লোকবল সংকটে বাকি ৫টি বন্ধ রয়েছে। তবে স্টেশনগুলোতে অবকাঠামগত কোনো সমস্যা নেই।

তিনি বলেন, পরিত্যক্ত রেললাইন বলতে এসব লাইনে আগে পণ্য পরিবহন হতো। এর মধ্যে জেলা খাদ্য গুদাম এখন নদী ও সড়ক পথে পণ্য পরিবহন করছে। আর পদ্মা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড নদী পথে জ্বালানি পরিবহন করছে। খাদ্য গুদাম এবং ওয়েল কোম্পানি আবারও পণ্য পরিবহনের জন্য আবেদন করলে লাইনগুলো চালু করা হবে। তবে দীর্ঘ বছর লাইনগুলো ব্যবহার না করায় কোনো কোনো স্থানে অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close