ইবি প্রতিনিধি

  ২৪ মে, ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

আবেদন জটিলতায় কমছে পিএইচডি গবেষক

মান্ধাতার আমলের আবেদন প্রক্রিয়ায় ভোগান্তি * আধুনিক পদ্ধতিতে আবেদন ডিজিটালি করা সম্ভব

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ডিজিটাল যুগেও চলছে হাল আমলের সনাতন পদ্ধতিতে এমফিল ও পিএইচডির ভর্তির আবেদন। গত সোমবার শুরু হয় এমফিল ও পিএইচডির ভর্তির কার্যক্রম। আবেদন ফরম কিনতে ও জমা দিতে দূর-দূরান্ত থেকে ক্যাম্পাসে সশরীরে উপস্থিত হতে হচ্ছে ভর্তিচ্ছুকদের। এতে ভোগান্তিতে পড়েন আবেদন প্রার্থীরা। এ ছাড়াও চাকরিজীবী প্রার্থীদের আবেদন করার ইচ্ছা থাকলেও আবেদনের ক্ষেত্রে ভোগান্তির কারণে অনেকে আবেদন করতে আসেন না। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকের সংখ্যাও কমছে বলে জানা গেছে। তবে এসব আবেদন প্রক্রিয়া সহজে আধুনিক পদ্ধতিতে করা যায় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল। এখন দরকার এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অগ্রণী ব্যাংক ইবি শাখায় নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং ৩০ মের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংকের ইবি শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকে এমফিল ও পিএইচডির জন্য পৃথকভাবে ১০০টি করে ২০০টি আবেদন ফরম দেওয়া হয়েছে। তার মধ্য থেকে আবেদনের প্রথম দুদিনে ফরম বিক্রি হয়েছে ৪টি। প্রথম দিন দুটি এবং দ্বিতীয় দিনে দুটি। প্রথম দিনে ফরম নেওয়া আবেদন প্রার্থীদের একই দিনেই সংশ্লিষ্ট বিভাগে ফরম জমা দেওয়া সুযোগ থাকলেও দ্বিতীয় দিন ফরম নেওয়া আবেদন প্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। কারণ ২১ মে থেকে ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। ফলে আবেদনপ্রার্থীকে পুনরায় আসতে হবে ক্যাম্পাসে।

অন্যদিকে আগামী ৫ দিনের মধ্যে ব্যাংক খোলা থাকবে দুদিন (২৩ ও ২৬ মে)। ২৩ মে আবেদন ফরম সংগ্রহ করলেও ফরমটি জমা দিতে পুনরায় ক্যাম্পাসে আসতে হবে প্রার্থীদের। এভাবে প্রতিবছর এনালগ পদ্ধতির আবেদন নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রার্থীদের। এক্ষেত্রে সাধারণ আবেদনপ্রার্থীরা নিজেদের সঙ্গে মানিয়ে নিলেও সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন বিভিন্ন পেশায় কর্মরত চাকরিজীবীরা, যারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচপি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভর্তি হতে আগ্রহী।

বর্তমান যুগের সঙ্গে এ মান্দাতার আমলের আবেদন প্রক্রিয়া কোনোভাবেই যায় না বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা। তারা বলেন, আবেদন প্রক্রিয়া সেকেলে হওয়ায় অনেকের ইচ্ছা থাকলেও আবেদন করেন না। যার ফলে আমরা গবেষকও কম পাচ্ছি। কিন্তু আবেদনটা যদি অনলাইনে হতো তাহলে আবেদনের সংখ্যাটা অনেক বাড়তো।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে আধুনিকায়ন করা যায় এমন অনেক বিষয় জানার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পদক্ষেপ নেয় না। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের চেয়ে সেকেলে পদ্ধতিই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বেশি পছন্দ। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিকায়নের দিকে হাঁটছে, সেখানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অনেকাংশে পিছিয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, আমরা বিষয়টি ইতিবাচক ভাবে নিয়েছি। মূলত এবার এটা করার সময় খেয়াল করা হয়নি। এসব ডিগ্রি অর্জনের আবেদন প্রক্রিয়া যাতে অনলাইনে করা যায়, আমরা সে ব্যবস্থা করব। সে সঙ্গে আবেদনের সময়সীমাও বাড়ানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close