মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ২২ মে, ২০২৪

আজ বাজারে আসছে নওগাঁর গুটি আম

আজ বুধবার বাজারে আসছে দেশের সীমান্তবর্তী বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলা নওগাঁর স্থানীয় জাতের আম। চাষিরা বলছেন, এ বছর প্রচণ্ড তাবপ্রবাহ ও খরায় আমবাগানের যত্ন ও পরিচর্যা বেশি করতে হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা।

আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে দেশ জুড়ে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছে জেলাটি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে এ জেলার আম। এতে চাষিদের ভাগ্য ফিরেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গোপালভোগ ৩০ মে, ক্ষীরশাপাতি/হিমসাগর ২ জুন, ফজলি ৫ জুন, ল্যাংড়া/হাঁড়িভাঙ্গা ১০ জুন, আম্রপালি ২০ জুন, ফজলি ২৫ জুন এবং আশ্বিনা/বারি-৪/বারি-১১/গৌড়মতি/কাটিমন ১০ জুলাই আম পাড়ার ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়।

আমচাষিরা বলেছেন, বছরের শুরুতে প্রকৃতিতে প্রচণ্ড শীত থাকায় গাছে মুকুল আসতে দেরি হয়েছে ১৫-২০ দিন। তাপপ্রবাহে মুকুল ও আমের গুটির ক্ষতি হয়েছে। বাগানের যত্ন ও পরিচর্যায় খরচ বেড়েছে। এবার বিগত বছরের তুলনায় অধিক দামে বিক্রির আশা করছেন তারা। আর কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বরেন্দ্র এলাকার আম দেশের অন্য এলাকার চেয়ে অত্যন্ত সুস্বাদু। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় এ জেলার আম্রপালি আমের চাহিদা দেশ জুড়ে। জেলায় যে পরিমাণ আমবাগান রয়েছে, তার মধ্যে শুধু আম্রপালি চাষই হয়েছে মোট জমির ৬০ দশমিক ৮০ শতাংশ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রতি বছর বাড়ছে আমবাগান। ২০২৪ সালে ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমবাগান গড়ে উঠেছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ হেক্টর বেশি। ২০২২ সালে ছিল ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর। ২০২১ সালে এ জেলার আম্রপালি আমের মধ্য দিয়ে রপ্তানি শুরু হয়। ২০২৩ সালে ৭ জন চাষির মাধ্যমে ২২১ টন আম্রপালি ও ব্যানানা ম্যাংগো ইতালি, সুইজারল্যান্ড, লন্ডন ও কাতারসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়। ২০২২ সালে রপ্তানি হয়েছে ৭৮ টন। জেলায় বছরে আমের বাণিজ্য প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে প্রায় ১৫ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে আম সংগ্রহের মৌসুমে এর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ দশমিক ২৪ টন হিসেবে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

আমচাষি নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমচাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাগানের পরিমাণ বাড়ছে। অন্যবার আমের মুকুল থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত বিঘাতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে যায়। তবে এ বছর খরার কারণে আরো ৪-৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। খরায় আমের গুটি পড়ে গেলেও যা ছিল, তা আকারে অনেক বড় হয়েছে। তাই গাছে আমের পরিমাণ কম হলেও দাম ভালো পেলে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’ একই কথা জানান আরো ২৫-৩০ জন আমচাষি।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এবার আম উৎপাদনের পাশাপাশি ভালো দামও পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আম্রপালি, বারি ও ব্যানানা জাতের আমবাগানের পরিমাণ বেড়েছে। রপ্তানি পরিসর বাড়াতে উত্তম কৃষিচর্চায় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আমের প্রক্রিয়াজাতকরণে উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close