প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২২ মে, ২০২৪

চা উৎপাদনে ১২তম বাংলাদেশ

চা শুধু পানীয় হিসেবেই নয়, অনেক সময় দেশে দেশে বন্ধুত্ব তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। যেমন ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় আরবদের প্রতি সমর্থন এবং ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মিসরে চা পাঠিয়েছিলেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চা পান শুধুই একটি অভ্যাস নয়, এর বেশকিছু স্বাস্থ্য গুণাগুণও রয়েছে। চা উৎপাদনে বাংলাদেশের চেয়েও এগিয়ে আছে আরো ১১টি দেশ।

খ্রিষ্টের জন্মের দেড় হাজার বছর আগে চীনের ইউনান প্রদেশে একটি ঔষধি পানীয় হিসেবে চা পানের প্রচলন শুরু হয়। বিশ্বে এ স্থানটি চায়ের জন্মস্থান নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টা থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দেশ চীনের বার্ষিক চা উৎপাদন গড়ে ৩১ লাখ টনের বেশি, যার বাজারমূল্য ৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। স্ট্যাটিস্টা বলছে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার ভারত। দেশটিতে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ টনের বেশি চা উৎপাদিত হয়। স্ট্যাটিস্টার তথ্যানুযায়ী, চা উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশের দেশ কেনিয়ার নাম। কেনিয়ায় বছরে সাধারণত ৫ লাখ টনেরও বেশি পরিমাণ চা উৎপাদন হয়। আফ্রিকান দেশগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদনকারী দেশ এটিই। তবে কেনিয়ায় উৎপাদিত চায়ের বেশিরভাগই রপ্তানি হয়। বলা হয়ে থাকে, চা-ই হলো কেনিয়ার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। কেনিয়া এত বিপুল পরিমাণ চা রপ্তানি করতে পারে। কারণ দেশটির স্থানীয়দের মাঝে চা পানের প্রবণতা কম। বিশ্বের শীর্ষ চা রপ্তানিকারী দেশের মাঝে শ্রীলঙ্কার নামও আছে। শ্রীলঙ্কার সিলন চা পৃথিবীব্যাপী বিখ্যাত। স্ট্যাটিসটা ও টি এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন শ্রীলঙ্কা অনুযায়ী, দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে আড়াই লাখ টনের বেশি চা উৎপাদিত হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার ওই ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কায় যে পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছিল, তার প্রায় ২ লাখ ৪২ হাজার টন চা রপ্তানি করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কা থেকে চা আমদানি করে তুরস্ক, ইরাক, রাশিয়া ইত্যাদি দেশ। চা উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মাঝে আছে ভিয়েতনামা। ভিয়েতনামের ব্ল্যাক ও গ্রিন টির খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। তবে ভিয়েতনামের সবুজ চায়ের কদর উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

স্ট্যাটিসটা অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে ১ লাখ ১১ হাজার টন চা উৎপাদিত হয়, তার আগের বছরের তুলনায় চা ১ লাখ টনেরও বেশি। ওই বছর দেশটির ১২৩ হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চা উৎপাদনের দিক থেকে ভিয়েতনাম পঞ্চম। চা উৎপাদনকারী শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায়ও বাংলাদেশ নেই। ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের তথ্যানুযায়ী, চা উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশ ১২তম। বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলো হলো তুরস্ক, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, আর্জেন্টিনা, জাপান ও থাইল্যান্ড।

বাংলাদেশ চা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চা উৎপাদনের অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে ২০২৩ সালে ১০২.৯২ মিলিয়ন কেজি (১ লাখ টনের কিছু বেশি) চা উৎপাদিত হয়েছে। উৎপাদিত চা থেকে ১ মিলিয়ন কেজির কিছুটা বেশি পরিমাণ চা রপ্তানি করা হয়েছে। রপ্তানিকৃত চায়ের মূল্য ২৭২ মিলিয়ন টাকার চেয়ে সামান্য বেশি। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, ২০০১ সালের সঙ্গে তুলনা করলে গত দুই দশকেরও বেশি সময়ের ব্যবধানে চায়ের উৎপাদন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ সময়ের মাঝে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই চায়ের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা যায়, ১৯৭০ সালে বাংলাদেশে চা বাগানের সংখ্যা ছিল ১৫০টি, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১৬৮টি। সূত্র : বিবিসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close