মনিরুজ্জামান, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)

  ২২ মে, ২০২৪

গ্রাহক নন, তবু গরিবের ঘাড়ে বিলের বোঝা

পল্লীবিদ্যুৎতের গ্রাহক নন তিনি, এমনই এক শ্রমজীবীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিস দিয়েছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। শুধু তাই নয়, নোটিস পাওয়ার পর অতিসত্বর বিল পরিশোধ না করলে ওই দিনমজুরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পল্লীবিদ্যুতের এই তুঘলকিকাণ্ডে বিপদে পড়েছেন ভুক্তভোগী ওই গরিব মানুষটি।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে হবির আলী। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। বাড়িতে তার নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ বা মিটার না থাকলেও হবির আলীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বাবদ ১ হাজার ৯৫১ টাকা দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিস দিয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিস।

হবির আলী জানান, আমার নামে কোনো মিটার নেই। তবু বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিস দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। আমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েছি, কোনো সমাধান পাইনি। একই এলাকার খোকন মিয়া নামের অন্য এক ব্যক্তির নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও গ্রাহকের সংযোগ হিসাব ৯৯৭/১৬৬০ দেখিয়ে ৮ হাজার ৮৪৬ টাকা বকেয়া দেখানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী খোকন জানান, এত টাকা বিল দেখে আমার মাথা ঘুরে গেছে। আমি গরিব মানুষ। বিদ?্যুৎ অফিসে গিয়েছিলাম। কোনো সমাধান হয়নি। গ্রাহকদের দেওয়া নোটিসের কপিতে বলা হয়েছে, রেকর্ডপত্র অনুযায়ী ৯/১০/২০২১ তারিখে বকেয়ার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় এ নোটিসপ্রাপ্তির পর অতিসত্বর বকেয়া পরিশোধ ও পুনঃসংযোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হইলো। অন্যথায় এ বকেয়া আদায়ের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ আইন ও পিডিআর অ্যাক্ট অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ- ওসিকে মামলা করার জন্য এই নোটিসের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আমিনুল ইসলাম, ফয়েজউদ্দিন, শিপন মিয়া, আমিনুর রহমান?, রজব আলী ও আজাদুল হকের নামে বকেয়া পরিশোধের নোটিস দেওয়া হয়েছে। অথচ তাদের নামে কোনো বকেয়া নেই বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে নোটিস পৌঁছে দেওয়া মিটার রিডার রায়হান মিয়া বলেন, ‘অফিস থেকে ওই নোটিসগুলো সরবরাহ করে গ্রাহক কাছে পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। আমি শুধু পৌঁছে দিয়েছি। যাদের নামে সংযোগ ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে, তাদের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি।

পল্লীবিদ্যুতের ভূরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মিজানুর রহমান বলেন, ওই ব্যক্তিরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বিষয়টি বিলিং সহকারীকে যাচাই করতে বলেছি। নোটিসপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামে যদি সংযোগ না থেকে থাকে, তাহলে এমন নোটিস জারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close