সোহাগ আহমেদ, যাত্রাবাড়ী

  ১৩ মে, ২০২৪

ভারতে কিডনি বিক্রি চক্রের তিন সদস্য গ্রেপ্তার

দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষকে জিম্মি করে ভারতে নিয়ে কিডনি বিক্রি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতফেরত এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলো- মো. রাজু হাওলাদার, শাহেদ উদ্দীন ও মো. আতাহার হোসেন বান্ধী। এ ছাড়া ওই মামলার পর গা ঢাকা দেওয়া আসামিরা হলো মো. মাছুম, শাহীন ও সাগর মোস্তফাসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন। গতকাল রবিবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার খন্দকার আল মুহিত এ তথ্য জানান।

অতিরিক্ত কমিশনার জানান, রুবিন নামে এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পার্শ¦বর্তী দেশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি চক্রের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় চক্র গড়ে তুলে এই অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল চক্রটি। এ পর্যন্ত চক্রটি ১০ জনকে ভারত পাঠিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

খন্দকার আল মুহিত জানান, নিম্নআয়ের মানুষকে টার্গেট করে সর্বোচ্চ তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা দিত মানুষ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি চক্রের সদস্যরা। তারা প্রথমে বিদেশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করত, পরে কৌশলে ভারত নিয়ে তাকে নানাভাবে বোঝানো হতো। এতে রাজি না হলে কিডনি বিক্রিতে বাধ্য করত তারা। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মিরপুর একটি চায়ের দোকানে ভুক্তভোগী রবিন তার এক বন্ধুর সঙ্গে চা পান করছিলেন ও সংসারের অভাব-অনটন নিয়ে কথাবার্তা বলছিল। এ সময় পাশে বসা চক্রের সদস্য (বর্তমানে পলাতক) মাছুমও চা পান করছিলেন। পরে মাছুম বলেন যে, ভারতে তার ব্যবসা আছে, ভুক্তভোগীকে ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিতে পারবে। একপর্যায়ে মোবাইল ফোন নম্বর আদান-প্রদান হয় ও অভিযুক্তর সঙ্গে ভিকটিম ভারতে যেতে রাজি হয়।

আসামিরা অনলাইনে বিমানের টিকিট কিনে ভুক্তভোগীর হোয়াটস অ্যাপে পাঠায়। ওই টিকিট নিয়ে ভুক্তভোগী গত বছরের ডিসেম্বরে ইনডিগো এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে ভারতের নয়াদিল্লিতে যান। সেখানে অপেক্ষায় থাকা চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীকে গ্রহণ ও পাসপোর্ট কেড়ে নেয়। পরে তাকে আটক রাখা হয়। এ সময় ভুক্তভোগী চাকরি দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বিভিন্ন রকম তালবাহানা করে তারা। পরে ভুক্তভোগীকে আর্থিক অনটন, সাংসারিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে একটি কিডনি দানে প্ররোচিত করে আসামিরা।

২০২৪ সালে ৪ মার্চ ভারতের গুজরাটে কিডনি নিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যমে ভুক্তভোগী ব্যক্তি জানতে পারেন যে, তার কিডনি আরেক দালাল চক্রের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে আসামিরা। পরে আসামিরা তাকে ৩ লাখ টাকা দেয় ও পরে আরো ৩ লাখ দেওয়ার কথা বলে। তবে দেশে এসে ভুক্তভোগী রবিন ধানমন্ডি থানা পুলিশকে জানালে চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close