মো. জাহিদুল ইসলাম
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ
চোখ এখন বাংলাওয়াশে
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে বাংলাওয়াশের লক্ষ্য নিয়ে আজ রবিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। দিনের বেলায় ঘরের মাঠে সচরাচর টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে না বাংলাদেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচটি দিনের বেলায় করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং বিশ্বকাপ মঞ্চে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দিনের বেলায়ই খেলতে হবে বাংলাদেশকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্ল্যাটফরম হিসেবেই নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ৪ ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছেন টাইগাররা। এমন ফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতিটা বেশ ভালোই হয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে ৫ ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। অবশ্য নিয়মিতভাবে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা হয় না টাইগারদের।
চলতি সফরে জিম্বাবুয়ের যে পারফরম্যান্স, তাতে তাদের বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করাটাই হবে বাংলাদেশের জন্য আদর্শ ফল। তবে স্বাগতিক দলকে এখনো অনেক সমস্যার সমাধান করতে হবে। গত দুই বছরে বোলাররা ভালো করলেও ব্যাটিং নিয়ে এখনো চিন্তার বিষয় রয়ে গেছে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তসহ অধিকাংশ ব্যাটারই এখন পর্যন্ত জ্বলে উঠতে পারেননি। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ৩ সপ্তাহ আগে যা বাংলাদেশ দলের জন্য চিন্তার বিষয়। ব্যাট হাতে শুধু ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং তাওহীদ হৃদয় কিছুটা ধারাবাহিকতা দেখাতে পেরেছেন। কিন্তু কোনো ম্যাচেই পুরো ব্যাটিং-লাইনআপ ক্লিক করতে ব্যর্থ হয়েছে।
কোনো ম্যাচে ওপেনাররা ভালো শুরু করলেও মিডলঅর্ডার ব্যাটাররা সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। আবার মিডলঅর্ডার জ্বলে উঠলেও শেষদিকে লোয়ারঅর্ডার ব্যাটাররা পুরোপুরি ব্যর্থ হচ্ছেন। সব মিলিয়ে পুরো ব্যাটিং-লাইনআপের ধারাবাহিকতাই এ মুহূর্তে একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বিশ্বকাপের আগে যা সমাধান করতে হবে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচে মাত্র ৪২ রানের ব্যবধানে ১০ উইকেট পতন বাংলাদেশ দলের জন্য একটা কঠিন বার্তা। দুই ওপেনার তানজিদ ও সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ রান তুলে প্রমাণ করেন মিরপুরের উইকেট খুব জটিল এবং স্লো ছিল না। বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ৫ রানে জয় পেলেও বাজে শট খেলে ব্যটাররা উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘তানজিদ ও সৌম্যর ব্যাটিংয়ে আমরা দারুণ খুশি। উইকেট খুব বেশি ভালো ছিল না, তবে আমাদের আরো সতর্ক হয়ে ব্যাটিং করা উচিত ছিল। আশা করি, পরের ম্যাচ আমরা ভুলগুলো শুধরে নিতে পারব।’ তিনি আরো বলেন, ‘উইকেট জটিল ছিল আমরা সবাই জানি। তবে সৌম্য এবং তামিমকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। জিম্বাবুয়েও ভালো বোলিং করেছে। আমি মনে করি, পুরো সিরিজেই এ পর্যন্ত আমাদের বোলাররা ভালো করেছে।’ চতুর্থ ম্যাচে জিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২৩ বারের মোকাবিলায় জয়ের সংখ্যাটা ১৬-তে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের বিপক্ষে মাত্র ৭টি ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল (সম্ভাব্য) : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুুদউল্লাহ, জাকের আলী, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকার, তানভীর ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
জিম্বাবুয়ে দল (সম্ভাব্য) : সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ফারাজ আকরাম, ব্রায়ান বেনেট, রায়ান বার্ল, জোনাথন ক্যাম্পবেল, ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, লুক জঙ্গি, ক্লাইভ মাদান্দে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি, এন্সলি এনদলোভু, রিচার্ড এনগারাভা ও সিন উইলিয়ামস।
"