ছোট-বড় সবার হাতে হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড ফোন। এ এক নতুন নেশা। বিশেষত কিশোর-কিশোরীরা সারা দিন ভিষণভাবে আসক্ত স্মার্টফোনে। ঠিক সেই সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হলো বইবিনিময় উৎসব। স্মার্টফোন নয়, বই থাকুক হাতে হাতে- এমন ধারণা থেকেই বইবিনিময় বলে জানান আয়োজকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিমুলতলায় বইপ্রেমীদের জন্য এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ উৎসবের আয়োজন করে ‘গ্রন্থ অলি’ নামের একটি বইপ্রেমী সংগঠন।

আয়োজকরা বলছেন, একবার পড়া হয়ে গেলে অনেকের কাছে বই পুরোনো হয়ে যায়। কখনো তা পড়ে থাকে বইয়ের তাকে। এভাবে ফেলে না রেখে একে-অপরের সঙ্গে বিনিময় করলে বই পড়ার পরিধি বেড়ে যায়। এমন চিন্তা থেকেই বইবিনিময় উৎসবের আয়োজন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের বাতেন খাঁ মোড়ের বাসিন্দা মাইসা সারাফ। তার বাড়িতে থাকা ৯টি বই দিয়ে নতুন বই সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, বইবিনিময় উৎসবের কথা জানতে পেরে এখানে এসেছি। অনেক বিখ্যাত লেখকের বই আছে। যে বইগুলো আমি পড়েছি, সেগুলোর বিনিময়ে অন্য বই নিয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারমিতা দাস বইবিনিময় উৎসবে এসে বলেন, “লেখক ওবায়েদ হকের ‘একটি শাড়ি এবং কামরাঙ্গার বোমা ও অন্যান্য’ বইটি দিয়ে আর একটি বই সংগ্রহ করেছি। এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।” আরেক শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম বলেন, “আবদুল্লাহ মাহমুদ নজীবের লেখা ‘শেষ রাত্রির গল্পগুলো’ বইটি দিয়ে লেখক রোদ্রময়ীর’র ‘মেঘ রোদ্দুর বৃষ্টি’ বইটি নিয়েছি। এখানে থাকা বইগুলো খুবই সুন্দর।”

নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ সাবেক শিক্ষার্থী মিলে এ উৎসবের আয়োজন করেন। তাদেরই একজন মোসা. আলিমা খাতুন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বইপ্রেমীদের জন্য এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে ১০০-এর বেশি বই আছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা একটি বই দিয়ে আরকেটি বই সংগ্রহ করতে পারছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা বই পড়তে আগ্রহী নন। তারা অধিকাংশ সময় ব্যয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয়। এ বাজে আসক্তি দূর করতে আমরা বইকে তাদের কাছে সহজেই পৌঁছে দিতে চাই।

আয়োজকদের আরেকজন সুরাইয়া ইসলাম জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ আমাদের অনেক সহপাঠীকে এ উৎসবে ডাকা হয়েছিল। তাদের অনেকেই এসে বই পরিবর্তন করে নিয়ে গেছে। আগামীতে আরো বড় পরিসরে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আগামীতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী এ বইবিনিময় উৎসবের আয়োজকরা।

"