নিজস্ব প্রতিবেদক
ভালো নেই জল্লাদ শাহজাহান
স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা
বঙ্গবন্ধুর খুনি, যুদ্ধাপরাধী, জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও জেএমবিসহ আলোচিত মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৬০ জনের ফাঁসির রায় কার্যকর করা ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া ভালো নেই। প্রতারণার অভিযোগে স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ও শাশুড়ি শাহিনূর বেগমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি। এ মামলা নিয়ে আদালতপাড়ায় দৌড়ঝাঁপ করে দিন কাটছে ৪৪ বছর কারাভোগ করা এ জল্লাদের।
গতকাল রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রকিবুল হাসানের আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি।
আদালত এ সময় বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আগামী ২৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- শাহজাহানের শ্বশুরবাড়ির স্বজন দীন ইসলাম, আজিদা বেগম, রাসেল ও বাবলু।
জল্লাদ শাহজাহানের আইনজীবী মো. ওসমান গনি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতারণার অভিযোগে জল্লাদ শাহজাহান তার স্ত্রী ও শাশুড়িসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে আগামী ২৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা দায়ের শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, বড় আশা করে সংসার পেতেছিলাম। কিন্তু স্ত্রী ও তার স্বজনরা আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। বিয়ের দেড় মাস পর আমার কাছ থেকে নেওয়া ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। এর কয়েক দিন পর আদালতে গিয়ে সাথী উল্টো আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যৌতুকের মামলা করে। তিনি আরো বলেন, আমি আইনজীবীর পরামর্শে আমার স্ত্রীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি ন্যায় বিচার চাই। আদালতে আমি ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সালে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে যান শাহজাহান। ২০০১ সালের আগে ১৯৮৮ সাল থেকে সহকারী জল্লাদ হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তখন তার বয়স ৩০ এর কিছু বেশি। বয়স যখন বিশের কোঠায়, তখন থেকেই ঘর ছাড়েন। মা-বাবা ছাড়াও শাহজাহানের তিনটি বোন ছিল। জেলে ঢোকার পর শুধু বড় বোনই শাহজাহানের সঙ্গে কয়েকবার দেখা করতে এসেছিলেন।
সাজা শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর শাহজাহানের বাবা মারা যান, ১০ বছর পর গত হন মা। তিনি কারো জানাজাতেই উপস্থিত থাকতে পারেননি। শাহজাহানের বোনের বয়স এখন ৯০-এর ঊর্ধেŸ; তার রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে তিনিই একমাত্র বেঁচে আছেন। বর্তমানে জল্লাদ শাহজাহানের হার্টের সমস্যা, রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা রয়েছে। ৪৪ বছর কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান শাহজাহান ভূঁইয়া।
"