মনসুর হেলাল, ছড়াকার, কবি ও প্রাবন্ধিক

  ০১ মার্চ, ২০২৪

লেখকের কথা

সৃজনশীল বইয়ের অভাব

চলতি বছরের বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘একটি ভালো বই একজন ভালো বন্ধুও বটে।’

বই পড়লে সাধারণত অন্যায় চিন্তা, অশুভ চিন্তা, ক্ষতিকর প্রবণতা মাথায় আসে না। বই পড়ার জন্য খুব যে টাকা পয়সা খরচ করতে হয়, তাও নয়। কাগজের বইয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল বইও এখন হাতের মুঠোয়। ইচ্ছাটাই হলো আসল।

বলতে গেলে সেই ইচ্ছা থেকেই বই পাগল মানুষ ছুটে যায় মেলা প্রাঙ্গণে। নানা স্টল ঘুরে সংগ্রহ করে প্রিয় লেখকদের বই। কিন্তু কথা হচ্ছে প্রিয় লেখক নিয়ে। কারণ পাঠকদের মধ্যে থাকে নানা দৃষ্টিভঙ্গি। একেক পাঠক একেক ধরনের চিন্তা-চেতনা সম্পন্ন। তাদের একটাই অভিযোগ- বইমেলায় সৃজনশীল বইয়ের খুব অভাব। অনেক প্রকাশক এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এক্ষেত্রে তাদের অভিযোগ, এই ধারার লেখকের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। সে দিকটাও ভেবে দেখতে হবে।

তারপরও বলতে হবে, একুশে বইমেলা আমাদের সাহিত্যের উৎকর্ষতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছর একুশে বইমেলায় এক মাসে কোটি কোটি টাকার বই বিক্রি হয়। হ্যাঁ, এ কথা সত্য। ফেব্রুয়ারির পর বইয়ের প্রতি আর কারো ভালোবাসা থাকে না। এটা যেন না হয়। বছরের বারো মাসই আমাদের বই কিনতে হবে। থাকতে হবে বইয়ের প্রতি ভালোবাসা।

তবুও আশার কথা, পুরো ফেব্রুয়ারিতে একুশে বইমেলায় যে পরিমাণ বই বিক্রি হয় সেটাই বা কম কীসে? ওই যে কথায় বলে না, ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামাই ভালো’। মামা তো আছে- এটাই স্বস্তি, এটাই আনন্দের। একুশে বইমেলা আছে বলেই আমরা প্রমাণ করতে পারি- বই ভালোবাসি। বইয়ের প্রতি আমাদের অনেক দরদ, মায়া এবং ভালোবাসা। আবার এ কথাও সত্য, সবাই কী বই কেনে? বই দেখে। তবে বই দেখতে আসাও তো একটি বড় ব্যাপার।

একুশে বইমেলা এবার আরো বেশি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে শেষ হতে যাচ্ছে। স্টল, প্যাভিলিয়নের সাজসজ্জা অন্যবারের চেয়ে এবার অনেক আলাদা ও অন্যরকম ছিল। হ্যাঁ, গর্ব করার মতোই আমাদের একুশে বইমেলা। শুধু মাতৃভাষায় লেখা এমন চিরসবুজ বইয়ের মেলা পৃথিবীর আর কোনো দেশে হয় না। কারণ ওই একটাই- আমাদের ভাষা আন্দোলনের শক্তি ও আবেগের সঙ্গে একুশে বইমেলার শক্তি ও আবেগ নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। যে আন্দোলনে সূচিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close