নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা দক্ষিণে ২২১ সরকারি প্রাথমিকে হবে নতুন ভবন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ২২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি-১ এ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ তলা নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় এ ভবন নির্মাণ করা হবে।
শেখ তাপস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে স্মার্ট পর্যায়ে নিয়ে যাবেন। আমাদের স্মার্ট বিদ্যালয় হবে, স্মার্ট শিক্ষার্থী হবে এবং স্মার্ট নাগরিক হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা কলাবাগান, মতিঝিলের দিলকুশা, নবাব কাটরা ও শ্যামপুরে চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছি। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ডিএসসিসি এলাকার প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন ভবন পাবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ডিএসসিসি এলাকায় ২২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার থেকে পাঁচতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’
বায়ুদূষণ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘দেশে যে জীবাশ্ম জ্বালানি আমরা ব্যবহার করি সেটি অত্যন্ত নিম্নমানের। আমাদের দেশে বায়ুদূষণের মূল কারণই হলো নিকৃষ্ট মানের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। রাজধানীতে যে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা হয়, সেটিতে সালফারের মাত্রা আন্তর্জাতিক মানদ-ের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি। ইউরোপের জীবাশ্ম জ্বালানিতে সালফারের পরিমাণ থাকে ১৫ পিপিএমের নিচে। আমাদের দেশে তা ৫০ পিপিএমের ঊর্ধ্বে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫০০ পিপিএম ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সেগুলো অস্বাস্থ্যকর এবং মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের পেট্রোলিয়াম করপোরেশন, পেট্রোবাংলা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা চিঠি দেব। তারা যেন ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়। আমরা চাই না, ঢাকা শহরে এ ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি আর ব্যবহার করা হোক। ঢাকা শহরে ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানিতে সালফারের পরিমাণ ৫০ পিপিএমের নিচে থাকলে বায়ুদূষণের মূল কারণ থেকে আমরা পরিত্রাণ পাব। আমাদের নতুন প্রজন্ম স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেড়ে উঠবে।’
ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ সিটি প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তাপস।
অনুষ্ঠানে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। এমন নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আজ এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের ফলে স্মার্ট শিক্ষার্থী গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা ঢাকা-১০ কে করে তুলব ১০ এ ১০। আমরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প সবকিছুকে একত্রিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মিলে প্রায় ৩০টির মতো স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। আজ চারটি স্কুলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে।’ পরে মেয়র তাপস বংশালের নবাব কাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মতিঝিলের দিলকুশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং শ্যামপুরে খোকন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাহবুবুর রহমান, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত আসনের নারগিস মাহতাব প্রমুখ।
"