নেত্রকোনা প্রতিনিধি

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

স্লুইসগেটে বাঁধ নেই দুশ্চিন্তায় কৃষক

নেত্রকোনার বয়রাহালা নদী

নেত্রকোনার বয়রাহালা নদীর মুখের তিনটি স্লুইসগেটের কোনোটিতেই বাঁধ নেই। এতে বর্ষায় ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় কৃষকদের। প্রতি বছর বয়রাহালা নদীর উজানে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ দিয়ে ফসল রক্ষা করেন তারা।

গতকাল শুক্রবার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সুøইসগেটটি মদন উপজেলার বয়রাহালা নদীর মুখে নির্মিত হলেও দুই পাশে কোনো বাঁধ নেই। এটির কর্যকারিতা না থাকায় এর দুদিকে পাশের জমির মালিক বিভিন্ন ধরনের ফল গাছ লাগিয়েছেন।

বাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দায়িত্ব থাকলেও এসব স্লুইসগেটে বাঁধ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগাম বন্যার কবল থেকে ফসল রক্ষার জন্য স্থানীয় কৃষকরা বিনা পারিশ্রমিকে প্রতি বছর বয়রাহালা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করছেন।

নেত্রকোনা পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড জাইকার অর্থায়নে ২০১৯ সালে স্লুইসগেট নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ২০২০ সালে আতাউর রহমান খান লি. নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্লুইসগেট নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়ে কাজ শুরু করে, যা ২০২১ সালে শেষ হয়।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গণেশ হাওরটি জেলার মদন ও আটপাড়া উপজেলার মধ্যে অবস্থিত। চার পাশে দুই উপজেলার গ্রামবেষ্টিত হাওরটি। গণেশ হাওরে ৯৭০ হেক্টর বোরো ফসলি জমি রয়েছে। এর মধ্যে মদনের অংশে ৬৭০ হেক্টর এবং আটপাড়ার অংশে ২০০ হেক্টর।

মদন উপজেলার হাঁসকুড়ি ও জয়পাশা গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, স্লুইসগেট নির্মাণ হলেও সেটি কোনো কাজে আসছে না। হাজার হাজার মণ ধান হয় গণেশ হাওরে। হাওর রক্ষার জন্য আরো দুটি স্লুইসগেট আছে। বয়রাহালা নদীর মুখে বাঁধ না থাকায় প্রতি বছর আমরা এলাকার লোকজন উজানে একটি অস্থায়ী বাঁধ দেই। আগাম বন্যার কবল থেকে আমাদের ফসল রক্ষার জন্য বাঁধটা একান্ত জরুরি।

আটপাড়া উপজেলার চড়পাড়া ও মধুয়াখালী গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, গণেশ হাওরের চতুর্দিকে গ্রাম রয়েছে। একসময় আগাম বন্যায় নাছিরখালী খাল দিয়ে পানি ঢুকে ফসল ডুবে যেত। এ খালে স্লুইসগেট হয়েছে। কিন্তু বয়রাহালা স্লুইসগেট হলেও বাঁধ না হওয়ায় আমরা আতঙ্কে থাকি। বাঁধ নির্মাণ হলে আমাদের ফসলহানির ভয় থাকত না।

মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাফায়াত উল্লাহ রয়েল বলেন, গণেশ হাওরে ফসল রক্ষার জন্য আটপাড়া অংশে একটি ও মদন অংশে দুটি স্লুইস গেট রয়েছে। মদনের বয়রাহালা নদীর মুখে স্লুইসগেট আছে কিন্তু বাঁধ নেই। বাঁধ না থাকায় অযত্নে ও অবহেলায় স্লুইসগেটটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর উজানে বাঁধ দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি তারা যেন বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান বলেন, পোল্ডার ছাড়া বাঁধ নির্মাণ করা যায় না। আর বাঁধটা কোথায় সেটা আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close