নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

দেখে-শুনে পণ্য কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে বাণিজ্য মেলায় অনেকেই হরেম রকমের পণ্য কিনতে যান। এদিন মেলায় দর্শনার্থীর ভিড় বেড়েছে। দেখে-শুনে পণ্য কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারাও। মেলার শেষদিকে বিক্রি বাড়াতে মূল্যছাড়সহ আলাদাভাবে নজর দিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে এবার সাড়া কম পাচ্ছেন বলে জানান অনেকে।

এদিকে বাণিজ্য মেলার দিন যত ফুরিয়ে আসছে, ভিড় তত বাড়ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোয় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাণিজ্য মেলা পর্যন্ত শাটল বাস সার্ভিসের কাউন্টারে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেরি করে শুরু হলেও মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার সময় পেরিয়ে ২০তম দিনে। হাতেগোনা মাত্র কদিন থাকায় উপস্থিতি বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ জমজমাট পরিবেশ মেলায়। কেউ কিনছেন গৃহস্থালি পণ্য, কেউবা হোম টেক্স ও অন্য পোশাক, কসমেটিকস। আবার কেউ খাবারসহ বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছেন। ক্রেতার তাদের পছন্দমতো কেনাকাটাতেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। বিক্রেতারা পণ্য বিক্রি বাড়াতে দিচ্ছেন মূল্যছাড়। কারো ব্যবসা আশাবাদী হলেও এবার বিক্রি কম বলে মনে করছেন অনেকে। ব্যবসায়ীরা বলেন, গত অন্যবারের তুলনায় এবার বেচাবিক্রি তেমন নেই। তাই বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এদিকে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বেশি হওয়ার আশা জানান ব্যবসায়ীরা।

সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত জমজমাট থাকে খাবারের স্টলগুলো। বসার স্থান না পেয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে সেরে নেন খাওয়ার কাজ। এবারের মেলায় ফুড বাংলো, সুলতান কাচ্চি, লাইবা রেস্টুরেন্ট, পুরান ঢাকার শাহি বিরিয়ানি, হাজির বিরিয়ানি, পুরান ঢাকার চিংড়ি ঝালফ্রাই, কস্তুরি কাবাবসহ বেশ কিছু খাবারের স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন খাবারের মধ্যে কাবাব, চিকেন মাসালা, বিরিয়ানি, হাঁসের মাংস, কাচ্চি, রাজাবাবুর চা ও তান্দুরি চায়ের চাহিদা বেশি।

উল্লেখ্য, রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুরু হওয়া ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা মেলা চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

বাণিজ্য মেলায় দিনে ৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি জয়িতার : গত কয়েক বাণিজ্য মেলায় জয়িতা ফাউন্ডেশন যোগ দিলেও এবারের মতো সাড়া আর কোনো মেলায় পড়েনি। মূল মেলা প্রাঙ্গণের কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা পাওয়ায় দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত জয়িতা।

২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্টলের বাইরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এক অনবদ্য প্ল্যাটফরম জয়িতা ফাউন্ডেশন। যেসব ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের আলাদা স্টল দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে জয়িতার মাধ্যমে।

গতকাল সরেজমিনে মেলা ঘুরে দেখা যায়, দিনের শুরু থেকেই জয়িতা স্টলে উপচে পড়া ভিড়। উদ্যোক্তাদের বাহারি পণ্যে সাজানো স্টল আগ্রহ নিয়ে ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা।

প্রতিদিন কেমন বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে জয়িতা ফাউন্ডেশনের বাণিজ্য মেলার প্রকিউরমেন্ট অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে এ বছর জয়িতা ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে ৩২ জন উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ২১ জন সরাসরি জয়িতা বিপণন কেন্দ্র থেকে এবং ১১ জন ই-জয়িতা থেকে।

ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলার শাটল বাসে উপচে পড়া ভিড় : বাণিজ্য মেলার দিন যত ফুরিয়ে আসছে, ভিড় তত বাড়ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোয় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাণিজ্য মেলা পর্যন্ত শাটল বাস সার্ভিসের কাউন্টারে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

কুড়িল বিশ্বরোড বিআরটিসি শাটল বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা যায়, বাণিজ্য মেলা উপলক্ষ্যে অস্থায়ী কাউন্টার বসানো হয়েছে। শুরুতে কম থাকলেও, ভিড় বাড়তে থাকায় গত সপ্তাহ থেকে কাউন্টারে লোকবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাউন্টারে টিকেট বিক্রির লোক থেকে শুরু করে টিকেট চেকিং এবং লাইন ধরে বাসে ওঠার শৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য আলাদা আলাদা লোক কাজ করছেন।

কুড়িল কাউন্টারের রোমান বলেন, ছুটির দিনগুলোয় শুধু কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাণিজ্য মেলার শাটল বাস সার্ভিসে লাখের ওপর টিকিট বিক্রি হয়। শুধু কুড়িল বিশ্বরোড না, ফার্মগেট থেকেও সরাসরি বিআরটিসি বাস যাচ্ছে বাণিজ্য মেলায়। প্রতিদিন ৬৪টি বিআরটিসি বাস শাটল সার্ভিস দিচ্ছে। ৪০টি বাস ছাড়ছে কুড়িল থেকে আর ২৪টি ফার্মগেট থেকে। তবে শুক্র-শনিবার ভিড় থাকায় এ দুদিন ১৬১টি বাস শাটল সার্ভিস দিয়ে থাকে। কুড়িল থেকে বাণিজ্য মেলা যেতে টিকিটের দাম ধরা হয়েছে ৩৫ টাকা এবং ফার্মগেট থেকে ৭০ টাকা। ছুটির দিনে বাস বাড়ালেও দর্শনার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close