যশোর প্রতিনিধি
পৌর কর্তৃপক্ষ ও হরিজন মুখোমুখি
যশোর নগরে ময়লা-দুর্গন্ধ
যশোর পৌরসভার হরিজন পল্লীর বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং হরিজনরা (পরিচ্ছন্নকর্মী) মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। হরিজনরা বিদ্যুৎলাইন সচল না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে করে মহাদুর্ভোগে পড়েছেন পৌরবাসীসহ রাস্তায় চলাচলরত পথচারীরা। গত পাঁচ দিন ধরে যশোর পৌর এলাকা থেকে হরিজনরা ময়লা পরিষ্কার না করায় সেগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি পৌর কর্তৃপক্ষ হরিজন পল্লীর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে হরিজনরা।
এদিকে, গত পাঁচ দিন ধরে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ায় গোটা শহর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে বিভিন্ন সড়কের পাশে বর্জ্যরে স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সাধারণ পথচারীরা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে চলাচল করতে পারছেন না।
শহরের রেলগেট তেঁতুলতলা এলাকার বাসিন্দা ওয়াসিম হোসেন বলেন, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া দরকার।
শহরের চুড়িপট্টি অম্বিকা বসু লেনের বাসিন্দা লিটন সরকার বলেন, আমরা তো নিয়মিত পৌরসভার কর পরিশোধ করে আসছি। এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া দরকার।
হরিজন নেতা মতিলাল বলেন, এখনো পর্যন্ত তাদের সঙ্গে পৌর মেয়র কোনো আলোচনা করেননি। তাদের দাবি না মেনে নিলে তারা কাজ করবেন না। গতকাল কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দিয়েছেন।
যশোর পৌরসভা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিরণ লাল সরকার বলেন, আমরা সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মবিরতিসহ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এদিকে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পৌরসভায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে যশোর হরিজন পল্লীতে বকেয়া পড়া প্রায় ৫ কোটি টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধের ঘোষণা দিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু। তিনি বলেন, এরই মধ্যে হরিজন পল্লীতে প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে লেবার দিয়ে পৌর শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হবে।
পৌর মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ বলেন, গত ১৭ বছরে হরিজন পল্লীতে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এত দিন কীভাবে সংযোগ রাখা হয়েছে তা জানতে মুঠোফোনে যশোর (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে মাত্র ৩ মাস এসেছি। এত বছর কীভাবে হরিজন পল্লীতে বিদ্যুৎ সংযোগ রাখা হয়েছে তা আমি বলতে পারব না।
প্রবীণ সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা রুকুনউদ্দৌলাহ বালেন, মূল গলদ রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগে। এখন সবমিলিয়ে পৌরবাসীর সামনে হাজির হয়েছে দুর্ভোগের পাহাড়।
"