প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

এআই ৪০ শতাংশ চাকরিতে প্রভাব ফেলবে

ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড বা আইএমএফের নতুন এক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব ধরনের চাকরির প্রায় ৪০ শতাংশকে প্রভাবিত করবে। খবর : বিবিসি।

আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ‘বেশির ভাগ পরিস্থিতিতে এআই সম্ভবত সামগ্রিকভাবে বৈষম্যকে আরো ভয়াবহ করবে।’ মিস জর্জিয়েভা আরো যোগ করেন, প্রযুক্তিকে প্রতিরোধ করতে নীতিনির্ধারকদের উচিত এই ‘সংকটজনক প্রবণতা’ নিয়ে আলোচনা করা। এআইর বিস্তারের সুবিধা এবং ঝুঁকিগুলোকে এর কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে।

আইএমএফ বলছে, এআই উন্নত অর্থনীতির একটা বৃহৎ অংশের চাকরিতে প্রভাব ফেলবে। এটা প্রায় ৬০ শতাংশের মতো। এর অর্ধেক ক্ষেত্রে, কর্মীরা এআইর একাগ্রতা থেকে সুবিধা পাওয়ার আশা করতে পারে, যা তাদের উৎপাদনশীলতাকে সমৃদ্ধ করবে।

অন্যভাবে বলা যায়, এআইর সেসব কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে, যা এখন মানুষ করছে। এটা শ্রমের চাহিদা কমাতে পারে, মজুরিতে প্রভাব এবং এমনকি চাকরি চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটাতে পারে। এদিকে, আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রযুক্তি স্বল্প আয়ের দেশে ২৬ শতাংশ চাকরিতে প্রভাব ফেলবে।

এই প্রতিবেদন ২০২৩ সালে গোল্ডম্যান স্যাকসের একটা প্রতিবেদনের অনুরূপ। যাতে বলা হয়েছিল, এআই তিন শ মিলিয়ন পূর্ণকালীন চাকরির সমান প্রতিস্থাপন করতে পারে। কিন্তু আরো বলা হয়েছে, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন চাকরিও হতে পারে। এরই মধ্যে, নভেম্বরে ইউকের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, চাকরিতে এআইর প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ শিক্ষার যে সংস্কার হয়েছে তা দক্ষতার সংস্কারে আরো বেশি বৃদ্ধি করবে।

মিস জর্জিয়েভা বলেছেন, ‘বেশির ভাগ দেশের এআইর সুবিধা ব্যবহার করার মতো অবকাঠামো বা দক্ষ জনশক্তি নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতিগুলোর মধ্যে এই প্রযুক্তি বৈষম্যকে আরো প্রকট করে তুলবে।’ আরো সাধারণভাবে বলা যায়, এআই প্রযুক্তি গ্রহণ করার পর উচ্চ আয় এবং তরুণ কর্মীরা তাদের মজুরি অসমভাবে বৃদ্ধির বিষয়টি দেখতে পাবে। আইএমএফের বিশ্বাস, নিম্ন আয় এবং বৃদ্ধ কর্মীরা পেছনে পড়ে যাবেন এআই প্রযুক্তির কারণে।

মিস জর্জিয়েভা বলেন, ‘ব্যাপক সামাজিক নিরাপত্তা জাল তৈরি করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ কর্মীদের জন্য আবার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা দেশগুলোর জন্য খুবই কঠিন।’ ‘এটা করে আমরা এআইকে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপে রূপান্তর করতে পারি, জীবিকা রক্ষা করতে পারি এবং বৈষম্যকে রোধ করতে পারি’, বলেন মিস জর্জিয়েভা।

সুইটজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে যখন বৈশ্বিক ব্যবসা ও রাজনৈতিক নেতারা একত্র হয়েছেন, তখনই আইএমএফের এই বিশ্লেষণ এলো। চ্যাটজিপিটির মতো অ্যাপ্লিকেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ার পর এআই আলোচনায় আসে। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি এই বর্ধিত নিয়ন্ত্রণের সম্মুখীন হচ্ছে।

গত মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এআইয়ের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের প্রথম আইনের একটি অস্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছেছেন। চীন এআইয়ের ওপর বিশ্বের প্রথম জাতীয় বিধান প্রবর্তন করেছে, যার মধ্যে অ্যালগরিদমগুলো কীভাবে তৈরি এবং স্থাপন করা যেতে পারে সে সম্পর্কিত নিয়মগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন অক্টোবরে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন, যা ডেভেলপারদের মার্কিন সরকারের সঙ্গে এআই সম্পর্কিত সুরক্ষা ফলাফলগুলো শেয়ার করতে বাধ্য করে। পরের মাসে যুক্তরাজ্য একটি এআই সেফটি সামিটের আয়োজন করেছিল, যেখানে প্রযুক্তির নিরাপদ উন্নয়নের বিষয়ে একটি ঘোষণাপত্রে একাধিক দেশ স্বাক্ষর করেছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close