বগুড়া প্রতিনিধি

  ১২ জানুয়ারি, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

দুই কূলই হারালেন বগুড়ার ৪ নেতা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত ও দলহারা হয়ে ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’র অভিধা পেয়েছেন বগুড়ার বিএনপির সাবেক চার নেতা। একদিকে কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন, অন্যদিকে তাদের বিএনপিতে ফেরার পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার শীর্ষ নেতারা। তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন বলেছেন, দেশের এই অবস্থায় যারা দেশ ও দলের বিপক্ষে গিয়ে সরকারের পক্ষে কাজ কাজ করেছেন, তারা জাতীয় বেঈমান। বিএনপিতে তাদের কোনো স্থান নেই।’

দুই কূল হারানো বিএনপির চার নেতার মধ্যে বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শোকরানা। তিনি ২ হাজার ৯৮২ ভোট পেয়ে জামানত হারান। বগুড়া-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাবেক বিএনপি নেত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিউটি বেগম ৩৪ হাজার ২০৩ ভোট পান।

বগুড়া-৪ আসনে সাবেক বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জিয়াউল হক মোল্লা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন। কাহালুর তিনদিঘী বাজারে হামলার শিকার হয়ে দুই কর্মীসহ রক্তাক্ত হন। গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। শাজাহানপুরে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পেট্রল বোমা ছোড়া হয়। বগুড়া-৭ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ডা. মোস্তফা আলম নান্নুর প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল ২ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে জামানত হারান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা জানিয়েছেন, “আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দিয়ে ‘আমণ্ডছালা’ দুটোই হারিয়েছেন তারা। এখন জাতীয় বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত। ভবিষ্যতে তারেক রহমান তাদের বিএনপিতে ফিরতে দেবেন না।”

এ ব্যাপারে মো. শোকরানা বলেন, আওয়ামী লীগ আমাকে কোনো ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে নির্বাচনে নেয়নি। স্বেচ্ছায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কেন পরাজিত হয়েছি, সারা দেশের মানুষ জানে। ভবিষ্যতে বিএনপিতে ফেরার ইচ্ছা আছে কি না- জানতে চাইলে শোকরানা বলেন, ‘আগামীতে পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেব।’ পরাজয়ের বিষয়ে সরকার বাদল বলেন, ‘এ ব্যাপারে কিছু বলতে আগ্রহী নই। তবে দলে ফিরবো কি না, তা ভবিষ্যৎ বলবে।’

ডা. জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, ‘তিনজন শক্তিশালী প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৪০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছি। আমাকে ২০০১ সালের পর বিএনপির কোনো পদে রাখা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে দলে ফেরার চেষ্টা করব।’

বিউটি বেগম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শেষ মুহূর্তে আমার সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। আবার বিএনপির একটা অংশ ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দিয়েছে। বিপুল ভোট পেয়েছি। কিন্তু কারচুপি করে আমাকে পরাজিত করা হয়েছে।’

বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের ভবিষ্যতে দলে ফিরিয়ে নেওয়া, না নেওয়া হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত। আমার মনে হয় ভবিষ্যতে তাদের বিএনপিতে ফেরার সুযোগ নেই।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close