শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাগান থেকে কমলা কিনে খুশি সবাই

শ্রীপুরে নগদ টাকায় মিলছে দার্জিলিংয়ের কমলা। কেমিক্যালমুক্ত কমলা পেয়ে দারুণ খুশি ক্রেতা। বাগানে দুই জাতের কমলা রয়েছে। তবে দার্জিলিং কমলায় বেশি আগ্রহী ক্রেতা। সপ্তাহজুড়ে বাগানেই চলছে বিক্রি। মানুষের এমন আগ্রহে খুশি উদ্যোক্তারাও। উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামে প্রায় ৩ একর জমিতে মিশ্র বাগানে চাষ করা হয়েছে দার্জিলিং কমলা ও চায়না মেন্ডারিন কমলা। চার উদ্যোক্তা মিলে মিশ্র এ ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। এছাড়া অন্তত ১০ জাতের আম, ড্রাগন, বল সুন্দরী বরইসহ বিভিন্ন ফলের গাছ রয়েছে বাগানে।

সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি করে লাগানো কমলা গাছের ফাঁক দিয়ে হাঁটার পথ রয়েছে। ৩ বছর আগে রোপণ করা কমলা গাছগুলো সবই এখন পরিপক্ষ। প্রায় সব গাছেই কমলা ধরেছে। ডালে ডালে ঝুলে আছে দার্জিলিং জাতের হলুদ কাঁচা রঙের বাহারি কমলা। চায়না ম্যান্ডারিন জাতের কমলাও ঝুলে আছে থোকায় থোকায়। রং ও আকার দেখে গাছ থেকে পছন্দমতো কমলা তুলে নিচ্ছেন ক্রেতা। বাগান ঘুরে পছন্দমতো কমলা কেনার সুযোগে পেয়ে আনন্দের সীমা নেই ক্রেতার। কমলা কিনতে বাগানে আসা আল আমিন বলেন, এটা দারুণ উদ্যোগ। কেমিক্যালমুক্ত কমলা বাগান থেকে সরাসরি কেনার আনন্দই অন্যরকম। একইসঙ্গে বাগানের গাছে ঝুলে থাকা দৃষ্টি নন্দন কমলা দেখার আনন্দও বেশ। এমন অভিনব পদ্ধতিতে কমলা বিক্রিতে চমৎকার সারা মিলবে আশা করছি।

সুলতানা আক্তার নামে আরেক নারী ক্রেতা তার শিশুকন্যাকে নিয়ে বাগানে এসেছিলেন কমলা কিনতে। তিনি বলেন, অনেক সুন্দর লাগছে বাগানের কমলা দেখে। তরতাজা রসালো কমলা হাতে নেওয়া দারুণ আনন্দের। আমার ছোট্ট মেয়ে গাছে ঝুলন্ত কমলা দেখে দারুণ খুশি। বাগানের দায়িত্বে থাকা সবুজ মিয়া বলেন, বাগানে ১০০ দার্জিলিং কমলা ও ৫০ চায়না ম্যান্ডারিন জাতের চারা রয়েছে। মাওলানা অলিউল্লাহ বাইজিদ, ফারুক আহমেদ, আবদুল মতিন ও আইনুল হক মিলে ২০২১ সালে বাগানের কাজ শুরু করেন। পরে তারাই এ বাগানের নাম রাখেন ‘তাওয়াক্কালনা ফ্রুট অ্যান্ড এগ্রো লিমিটেড’।

সবুজ মিয়া বলেন, আমাদের এ বাগানে দুই জাতের কমলা রয়েছে। দার্জিলিং কমলা ও চায়না ম্যান্ডারিন কমলা। এছাড়া বিভিন্ন জাতের আম, বল সুন্দরী বরই, সফেদা, জাম্বুরা ও ড্রাগন ফলেরও চাষ করা হয়েছে। ১৫ দিন আগে বাগান থেকে কমলা বিক্রি শুরু হয়েছে। কিছু কাটিমন আমও বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। দার্জিলিং কমলা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। একেকটি দার্জিলিং জাতের কমলা ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজন হয়ে থাকে। দেখতেও দারুণ সুন্দর সজীব-সতেজ। বাগান থেকে তরতাজা কমলা কিনতে মানুষ আসছে প্রতিদিন। কিনে নিয়ে যাচ্ছে, আর বাগানের ছবি তুলছে।’

উদ্যোক্তা মাওলানা অলিউল্লাহ বাইজিদ বলেন, দুই বছর আগে ১০ বছরের চুক্তিতে জমি নিয়ে এখানে বাগান করা হয়। ক্রেতাদের কাছে অরগানিক তরতাজা ফল তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই চার উদ্যোক্তা মিলে এ কাজ শুরু করি। এই প্রথমবার দারুণ ফলন হয়েছে। আশা করি, এ বছর অনেক কমলা বিক্রি করতে পারব। বাগানে কেউ এলেই ৪-৫ কেজি করে কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এমন সাড়া আমাদের আনন্দ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে দার্জিলিং কমলা চাষে এ চার উদ্যোক্তা বেশ সফল হয়েছেন। তাদের বাগানের কমলার মান চমৎকার। কমলার আকার-রং খুবই সুন্দর। তাদের এমন সাফল্য অন্যদেরও কমলা চাষে আগ্রহী করবে। বাগান থেকে ক্রেতাদের পছন্দমতো কমলা বিক্রির এ উদ্যোগ দারুণ ও ব্যতিক্রমী। এমন উদ্যোগও সবার নজর কাড়ছে। আমাদের দেশের আবহাওয়া দার্জিলিং কমলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। কমলার আকার-রং ও স্বাদ চমৎকার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close