নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

দেশে ৫০ শতাংশ গাড়ি হবে বৈদ্যুতিক

বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারে ২০৫০ সালের মধ্যে বিপ্লব ঘটাতে চায় বাংলাদেশ। ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যান (আইইপিএমপি) ২০২৩-এ বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ ভাগ জনগণের জন্য ইভি বা ইভি বা ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা হবে। এই লক্ষ্য নিয়ে আইইপিএমপি-২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) ইভির জন্য চার্জিং স্টেশন তৈরি করেছে। তবে ডেসকোর একার পক্ষে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। অন্য বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসা উচিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বাংলাদেশে এখন যে তরল জ্বালানি ব্যবহার হয় তার অন্তত ৮০ ভাগই পরিবহন খাতে ব্যবহার হয়ে থাকে। অন্তত ৪০ ভাগ মানুষ ইভি ব্যবহার করলে জ্বালানির ব্যবহারে একটি বড় পরিবর্তন ঘটবে। যাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলি বলেন, মানুষ ইভি আনলে সেগুলো চালানোর জন্য তো চার্জ দিতে হবে। এ জন্যই শহরে তারা কয়েকটি চার্জিং স্টেশন করেছেন। পর্যায়ক্রমে ইভি ব্যবহার জনপ্রিয় হলে চার্জিং স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

আইইপিএমপি-২৩-এ দেখানো হয়েছে, দেশের ৪৮ ভাগ জ্বালানি ব্যবহার হয় গৃহস্থালিতে। এই জ্বালানির অন্তত ৫৫ ভাগই বায়োমাস (জৈববস্তু)। কাঠ থেকে সাধারণ মানুষ এই জ্বালানির সংস্থান করেন। এর বাইরে ২৬ ভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ১৯ ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। আইইপিএমপি-২৩-এ বলা হয়েছে, বায়োমাসের জায়গা দ্রুত দখল করছে এলপিজি। দেশের ২৯ ভাগ জ্বালানি ব্যবহার হয় শিল্প খাতে। এই ২৯ ভাগের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস ৪৫ ভাগ, এর বাইরে কয়লা ৪২ এবং ১২ ভাগ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়।

বাংলাদেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা একেবারে কম। এখনো ইজিবাইক এবং ব্যাটারি রিকশা ছাড়া বড় কোনো পরিবহনে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় না। আইইপিএমপি-২৩ এ গাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ির ৪০ ভাগে উন্নীত করতে হবে ইভি। এর বাইরে ১০ ভাগ বাস এবং ট্রাক হবে ইভি।

সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ইলেকট্রিক বাস আমদানির ওপর জোর দিয়েছে। এখন বাজারে এমন বাস রয়েছে যেগুলো একবার চার্জ দিলে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। আবার ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রেও ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত একবার চার্জ দিলেও যাওয়া সম্ভব।

মার্কিন কোম্পানি টেসলা ভারতে তাদের ইভি সংযোজন কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে টেসলার তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ২০২৫ সালে ২০ লাখ টাকায় টেসলার কয়েকটি মডেলের গাড়ি সরবরাহ করবে তারা। দেশের মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চলেও ইলেকট্রিক গাড়ি (ইভি) সংযোজন করার পাশাপাশি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হলেও বাংলাদেশেও কম দামে ইভি পাওয়া সম্ভব। বিকল্প হিসেবে ইভি জনপ্রিয় করতে আমদানিতে কর হ্রাসের ওপরও জোর দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, আমরা নতুন আইইপিএমপি-২৩ প্রণয়নের ক্ষেত্রে কীভাবে জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয় সম্ভব তার ওপর জোর দিয়েছি। এখন সবারই প্রধান চিন্তার বিষয় জ্বালানির দর। ইভির প্রচলন শুরু হলে ডিজেল এবং অকটেন আমদানি কমবে। সে ক্ষেত্রে বড় রকমের সাশ্রয় হবে বলে আমরা মনে করি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close