আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

  ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

ফুলবাড়ীতে কবর ধ্বংসের অভিযোগে মামলা

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর (পুরাতন বন্দর) এলাকায় নুরপুর মৌজায় শতবর্ষ পুরোনো কবরস্থানের শতাধিক কবর কাটার অভিযোগে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করা হয়। গত বুধবার বিকাল ৪টায় এলাকাবাসীর পক্ষে মো. অহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. মোশারফ হোসেনসহ (মোশা) ছয়জনকে আসামি করে ফৌজদারি মামলা করা হয়।

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, বাসুদেবপুর, নুরপুর ও দাদপুর এই তিন গ্রামের একমাত্র কবরস্থান এটি। ১০০ বছর পূর্ব থেকে সর্বসাধারণের কবরস্থান হিসেবে তিন গ্রামের মৃত ব্যক্তিদের সমাহিত করা হয়। কবরস্থানটি নুরপুর মৌজার সাবেক দাগ ১৬৬, হালদাগ ২৭৫ এ জমির পরিমাণ ২.২০ একর। এস এ খতিয়ান মূলে দাবিকৃত ব্যক্তিবর্গ তছির উদ্দিন মন্ডল, এজার উদ্দিন মন্ডল ও আফাজ উদ্দিন মন্ডল। তাদের পিতা মৃত বছির উদ্দিন মন্ডল উল্লেখিত গ্রামবাসীকে মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করতে কোনো দিনও বাধা দেননি। তার তিন ছেলে তছির উদ্দিন মন্ডল, এজার উদ্দিন মন্ডল ও আফাজ উদ্দিন মন্ডল জীবিতকালে নালিশি কবরস্থানে কবর দিতে কাউকে কখনো বাধা দেননি। বরং তারা অত্র এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কেন কবর দেওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন। বছির উদ্দিনের তিন ছেলের মৃত্যুর পরে তাদের ছেলেরাও কবর দিতে নিষেধ না করলেও মৃত আফাজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলেরা কবরস্থান ধ্বংসের নিমিত্তে প্রায় শতাধিক কবর কেটে পুকুর ভরাট করেন। মৃত আফাজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মোশারফ হোসেনসহ (মোশা) অপর ভাইয়েরা ভেপু মেশিন দিয়ে কবরস্থানের পাড় কাটার সময় এলাকাবাসী বাধা দিলে তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং মৃত ব্যক্তিদের অবমাননাকর মন্তব্য করতে থাকেন। দফায় দফায় তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও একপক্ষ উপস্থিত না হওয়া এবং অপর দুই পক্ষ কবরস্থানের জায়গা ছেড়ে দেব দেব বললেও এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এ কারণে এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও থানা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সে কারণে আদালতে মামলা করা হয়। এর আগে শতাধিক কবর কেটে পুকুর ভরাট করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিন গ্রামের শত শত এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধন শেষে ওই তিন গ্রামের শত শত এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় ধর্মপ্রাণ মানুষ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

মামলার আসামি মোশাররফ হোসেন মোশার কবর ধসের দাবি অস্বীকার করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার তদন্ত রিপোর্টে কবর কেটে পুকুর ভরাট করা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। এখন বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, দেখার বিষয় আদালত কি রায় দেয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফুলবাড়ী থানাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পরে মামলার শুনানি শুরু করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close