![reporter](/templates/web-ps/images/rp_icon.png)
তিন কবির ৬ কবিতা
![](/assets/news_photos/2023/12/08/image-429958.jpg)
আদ্যনাথ ঘোষ হাওয়াদের শরীরে
গাছেরা কি খেয়েই ফেলে গাছেদের ছাল!
কেননা মানুষ খায় মানুষের রক্ত, মাংস, হাড় আর
তার অস্থিমজ্জার শেষ অবশেষ।
মুখ নাকি মুখের লাগি আঁচলের জোছনার শরীর।
জানি, ভিখারির অন্ন লাগে ঈশ্বরের ভোজে।
খুব বেশি মানুষের দেখা ঈশ্বরের চোখ,
মনে পড়ে কি?
মনে কি পড়ে পড়শিদের মুখের ফেনা
ভাতের হাওয়ার হিসেব?
আসলে তো এই ভালো- হাওয়াদের শরীরে
শুধু হাওয়াদের ওম।
বাউল পুরাণ
তবু হায়! এই জবাফুল,
এই পৌরাণিক উন্মাদনা-
এই ষড়ঋপুর ষড়যন্ত্রের হাত,
জীবতত্ত্বের অন্ধকার গর্ভকোষ-
এইবার উঠে পড়ো জল ও
আগুন, ভেঙে করো চুরমার-
ছন্দ ও সীমানা ভেঙে,
উঠে এসো উষাচক্রে-
একলা বাউল হয়ে-
এই দূরাগত স্বপ্নের দোকান ছেড়ে
মানুষের বারান্দায়।***
শফিক হাসান উৎস থেকে অনাদি
আলোর মাঝে লীন ধূসর অন্ধকার
নাকি অন্ধকারে আলোক রেণুর নৃত্য
আলো-আঁধারের চিরন্তন লুকোচুরি
বিভ্রান্তি বাড়ায়, কেউবা খোঁজে দিশা!
তবুও আলো তবুও অমানিশা-কাল
তবুও সংগ্রাম তবুও উত্থান-পতনপর্ব
সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকেই বলে যায়-
যুযুধানেই পরিণত হয় মানবসভ্যতা
আলোক-উৎস গায় অন্ধকারের গান
ছদ্মবেশী আলো ধাবিত হয় মধ্যযুগে!
আত্ম-অহমিকা
কোনো এককালে গোলাভরা ফসল ছিল
আরো ছিল বইয়ে-পড়া পুকুরভরা রূপকথা
বুকপকেটে রাখা ছিল থইথই সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য
মাঠ-ঘাট মাড়িয়ে ইতিহাস পেছনে ফেলে
খেরোখাতায় লিখে চলি আধুনিক গল্পগাথা
আমাদের এই ওই সেই বর্ণাঢ্য অতীত ছিল
তাবৎ গোপন অন্ধকারে লুকিয়ে রেখে-থুয়ে
স্ট্যাটাস-উৎসব করি এখন- বুজরুকি ছড়াই
প্রজন্ম যেন বলে- পূর্বপুরুষ ঐতিহ্যখোর নন
অবলীলায় ছিন্ন করতেন খোলামকুচির প্রান্তর!***
সালমা সুলতানা চির অনিত্য
বাতাস কী জানে-
কোথায় যাবে, কতদূর তার পথ
মন কী জানে-
কে রাখবে কথা, ভাঙবে শপথ।
কাগজ কী জানে-
কী খবর হবে, ভাঙবে তারই বুক
কলম কী জানে-
কী লিখতে হবে, কে আছে সুখে, কার-বা অসুখ।কী আশায় তবে ছোটাছুটি সবে!
চির অনিত্য এই বিত্ত-চিত্ত, চির অনিত্য অলীক সব কী আশায় তবে বাঁধি খেলাঘর, ধিঙ্গি পায়ে চলছি সরব।
নিশিগন্ধা
তোমাকে ভাবতেই দেখি অদূরে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা
দেখি না কিছুই।
তোমাকে দিতে যাব, দেখি আঁধারেই নিশিগন্ধা,
দুহাত শূন্যই।তোমাকে ছুঁতে যাব, দেখি এপার-ওপার থইথই
হয় না ছোঁয়া
তোমাকে ভুলে যাব, চোখের কিনার জল ছুঁইছুঁই
হয় না ভোলা।