ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৩ জুন, ২০২৪

আফগানিস্তানে বেঁচে রইল বাংলাদেশের স্বপ্ন

ছবি : সংগৃহীত

সেন্ট ভিনসেন্টের উইকেটে যেকোনো কিছুই হতে পারে। আর হলোও তাই। দারুণ উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে আফগানিস্তান। রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের দুই ফিফটিতে ১৪৮ রানের পুঁজি পায় তারা। পরে গুলবদিন নাইবের দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ঝলক থামিয়ে স্মরণীয় জয় তুলে নেয় রশিদ খানের দল।

আফগানদের ২১ রানের জয় এবার বাংলাদেশের বন্ধ হতে যাওয়া সেমির দরজা খুলে দিয়েছে। ২ ম্যাচে কোনো জয় না পাওয়া নাজমুল হাসান শান্তর দলকে সে জন্য জিততে হবে খোদ আফগানিস্তানেরই বিপক্ষে, নিজেদের শেষ ম্যাচে। তবে তার আগে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে অজিরা জিতে গেলে বাংলাদেশের বিদায় ঘটে যাবে। মিচেল মার্শের দল সে ক্ষেত্রে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ থেকে। তবে অস্ট্রেলিয়া যদি হেরে যায় ভারতের বিপক্ষে, তবুও আফগানিস্তানকে বাংলাদেশ হারালেই হবে না। নেট রানরেটে নাজমুল হাসান শান্তর দল অনেক পিছিয়ে। -২.৮৪৯ নেট রানরেট বাংলাদেশের। অজিদের ০.২২৩ নেট রানরেটের ধারেকাছে যাওয়াই বিশাল কাজ হবে টাইগারদের জন্য। তবে বাংলাদেশ যদি আফগানিস্তানকে ২৭ রানে হারায় এবং ভারত যদি অস্ট্রেলিয়াকে ৫৫ রানে হারিয়ে দেয়- তাহলে প্রথম দুই ম্যাচ হেরেও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাবে বাংলাদেশ।

এদিকে আগে ব্যাট করে গুরবাজের ৪৯ বলে ৬০ ও ইব্রাহিমের ৪৮ বলে ৫১ রানে ১৪৮ রান করে আফগানিস্তান। রান তাড়ায় ম্যাক্সওয়েল ৪১ বলে ৫৯ করলেও বাকিদের ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়া থেমে যায় ১২৭ রানে। বোলিংয়ে আফগানদের নায়ক গুলবদিন। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে তিনি নেন ৪ উইকেট। দারুণ দুই ক্যাচও হাতে জমান এ অলরাউন্ডার। এটাই যেকোনো সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম জয়।

ট্রিকি রান তাড়ায় নেমে তৃতীয় বলেই ট্রেভিস হেডকে তুলে নেন নাবিন উল হক। সেøায়ার বলে মারতে গিয়ে বোল্ড হন অজি এ ওপেনার। তৃতীয় ওভারে নাবিনের শিকার অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ৯ বলে ২ চারে ১৩ করে তিনি সোজা তুলে দেন ক্যাচ। এসব উইকেটে যার ওপর সবচেয়ে বড় ভরসা অস্ট্রেলিয়ার সেই ডেভিড ওয়ার্নারও বিদায় নেন পাওয়ার প্লের মধ্যে। ৮ বলে ৩ রান করে তিনি শিকার মোহাম্মদ নবির।

এরপর মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন ম্যাক্সওয়েল। ম্যাচেও কিছুটা ফেরে অজিরা। দুজনের জুটিত ৩৯ রানের বেশিরভাগই আনেন ম্যাক্সওয়েল। গুলবদিনের আচমকা লাফানো বলে পুল করে ক্যাচ দেন তিনি। পরে টিকেননি টিম ডেভিডও। নাইবের ভেতরে ঢোকা বলেই এলবিডব্লিউতে বিদায় তার। ম্যাক্সওয়েল তবু ধরে রাখেন হাল। ৩৫ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ম্যাথু ওয়েডকে নিয়েও এগুচ্ছিলেন অজি এ ব্যাটার। তবে কাজ শেষ না করে তাকেও করেন গুলবদিন। মারতে গিয়ে আউটসাইড এজড হয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন ৪১ বলে ৫৯ করে ম্যাক্সওয়েল। রশিদ খান পরের ওভারেই শিকার ধরেন ম্যাথু ওয়েডকে। সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে অজিদের বিপদ বাড়িয়ে যান তিনি। পরে কামিন্সকে বোল্ড করে চতুর্থ শিকার ধরেন কামিন্স। অ্যাস্টন অ্যাগার, অ্যাডাম জাম্পারা কঠিন সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় আফগানিস্তান। টুর্নামেন্টের সফল ওপেনিং জুটির ঝলক দেখানো গুরবাজ-ইব্রাহিম আবার দাঁড়িয়ে যান।

আর্নোস ভেল স্টেডিয়ামের কঠিন উইকেটে তারা মিলে পার করে দেন ১৫ ওভারের বেশি। স্কোরবোর্ডে রান তখন ১১৮। ১৬তম ওভারে গুরবাজের আউটে ভাঙে এ জুটি। ৪৯ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৬০ রানের ইনিংস খেলে স্টয়নিসের শিকার হন তিনি। এরপরই অবশ্য পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। ইব্রাহিমকে তুলে নেন অ্যাডাম জাম্পা। কামিন্স করেন হ্যাটট্রিক। তবু করিম জানাত ৯ বলে ১৩ ও মোহাম্মদ নবির ৪ বলে ১০ রানে দেড়শোর কাছে চলে যায় আফগানরা। উইকেটের ধরনের কারণে ওই রান যে অনেক চ্যালেঞ্জিং তখনই টের পাওয়া যাচ্ছিল।

এদিকে ভারতের ১৯৭ রান তাড়ায় কোনো অভিপ্রায় দেখাতে পারল না বাংলাদেশ। রান তাড়ায় উদ্দেশ্যহীন থাকলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। জাসপ্রিট বুমরাহ, কুলদীপ যাদবদের ছোবলের জবাব দিতে পারলেন না তারা। পুরো ২০ ওভার খেলে বাংলাদেশ করতে পারল ১৪৬ রান। ৫০ রানের বিশাল বিশ্বকাপ থেকে কার্যত বিদায় নিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। কাগজের হিসেবে টিকে থাকলেও বাস্তবে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
খেলা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close