ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহান ওমরের (বীর উত্তম) সমাবেশ আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ও প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আ. সালেক। ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া) আসনে দলীয় মনোনয়ন পান।

এর আগে সোমবার সকাল ১১টায় কাঁঠালিয়া উপজেলা সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরিচয় করিয়ে দেন শাহজাহান ওমর।

সমাবেশে শাহজাহান ওমরের বাম পাশে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে চেয়ারে বসে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী। তার পাশে বসে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন কবির। অপর দিকে শাহজাহান ওমরের ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার, সহসভাপতি আবুল বসার বাদশা, শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন।

• আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সমাবেশে বসে ছিলেন কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি।
• সমাবেশর সময় শাহজাহান ওমরের সঙ্গে পিস্তল থাকার দাবি বিএনপি নেতার।
• লাইসেন্সক করা অস্ত্র নিয়ে সমাবেশ করা বিষয়ে নির্দেশনা পাননি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

জনসমাবেশে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘কাঁঠালিয়া আওয়ামী লীগের কোনো গ্রুপিং থাকতে পারবে না। এখানে তরুণ লীগ, কিবরিয়া লীগ, বুড়ালীগ ও বাচ্চালীগ থাকতে পারবে না। এখানে থাকবে শুধু শেখ হাসিনা গ্রুপ।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপির দলবলসহ আমি আপনাদের মেহমান, আমাদের বরণ করে নিবেন। আমরা শিক্ষিত লোক, আমাদের সম্মান করলে আপনাদের আমরা সম্মান করব।’

সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান শাহজাহান ওমর। ১১ ডিসেম্বরের পরে আবার দেখা হবে বলেও জানান তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মী ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে এলেও শাহজাহান ওমরকে তা দেওয়ার সুযোগ পাননি। এতে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়।

আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সমাবেশে আসা সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল মিয়াজী বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্রটি ব্যারিস্টার মোহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের লাইসেন্সকৃত, বৈধ অস্ত্র ছিল। তিনি থানার অনুমতি নিয়ে কাঁঠালিয়া আসেন, তখন কাঁঠালিয়া থানার ওসিও এখানে (সমাবেশে) উপস্থিত ছিলেন। আমার কাছে অস্ত্রটি রাখতে বলায় আমি আমার হাতে রাখছি। তার সঙ্গে আরো একটি লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিল।’

জানতে চাইলে কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমিসহ ওই জনসমাবেশ কোনো পুলিশ উপস্থিত ছিল না। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা ডিউটিতে ছিল। আইনগতভাবে তিনি অস্ত্র নিয়ে জনসমাবেশ করতে পারেন না।’

ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আ. সালেক বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো প্রার্থী জনসমাবেশে লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নিয়ে যেতে পারবে কি না, এ বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

পিডিএস/আরডি